ট্রেনে টিকিট না কেটে যাতায়াত—এটা যেন বহুদিনের সমস্যা। কিন্তু এবার শিয়ালদা স্টেশনে সেই সমস্যার মোকাবিলায় একেবারে নতুন উদ্যোগ নিল রেল। যাত্রীদের সুবিধা করে তুলতে ও বিনা টিকিটে ভ্রমণ বন্ধ করতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ এক মেশিন—মোবাইল ইউটিএস।
যন্ত্রে মিলছে টিকিট, লাইন দেওয়ার ঝামেলা নেই
শিয়ালদা ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম জসরাম মীনা ও ডিআরএম রাজীব সাক্সেনার নেতৃত্বে এই নতুন প্রকল্প চালু হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এই যন্ত্রগুলি স্টেশন প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে। যাত্রীরা এখানে দাঁড়িয়ে খুব সহজেই মোবাইল ইউটিএস ব্যবহারের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা থেকে মুক্তি মিলছে।
দারুণ সাড়া যাত্রীদের
রেল জানিয়েছে, এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া পেয়েছে। গত তিনদিনে ৯৫২ জন যাত্রী এই পরিষেবা ব্যবহার করে টিকিট কেটেছেন। এর ফলে রেলের রাজস্ব হয়েছে ২৬,৩০৫ টাকা। এই সংখ্যাই বুঝিয়ে দিচ্ছে—মানুষ ধীরে ধীরে প্রযুক্তি নির্ভর এই ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখছেন।
প্রবীণ নাগরিক, অসুস্থ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য আশীর্বাদ
এই মেশিনগুলি বিশেষভাবে উপযোগী তাঁদের জন্য, যাঁদের টিকিট কাউন্টারে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানো কঠিন। প্রবীণ নাগরিক, অসুস্থ, মহিলা ও বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীরা খুব সহজেই এই যন্ত্রের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন। শুধু তাই নয়, এই যন্ত্রগুলো যেকোনও সময় যেকোনও জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তাই বেশি ভিড় হওয়া জায়গায় সহজেই মোতায়েন করা যাচ্ছে।
দ্রুত পরিষেবা, রেলকর্মীদের চাপও কমছে
এই প্রযুক্তিনির্ভর পরিষেবা রেলের কাজের গতি বাড়িয়েছে। রেলকর্মীদের উপরে চাপ কমছে, অন্যদিকে যাত্রীদের জন্য দ্রুত পরিষেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে। শিয়ালদার মতো ব্যস্ত স্টেশনে এই মেশিন কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে।
ভবিষ্যতের ট্রেন পরিষেবা কেমন হবে?
শিয়ালদার ডিআরএম রাজীব সাক্সেনা জানিয়েছেন, ‘‘এই প্রযুক্তিনির্ভর পদক্ষেপ যাত্রীবান্ধব ও ভবিষ্যতের রেল পরিষেবার প্রতিফলন।’’ এই মেশিন থেকে রিয়েল টাইমে টিকিট বিক্রির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, যা যাত্রী চলাচলের বিশ্লেষণে এবং পরিষেবা উন্নয়নে সাহায্য করবে।