অনেকেই মনে করেন শরীরচর্চা মানেই জিমে গিয়ে কসরত করা। কিন্তু একথা আজকাল আর বিশেষজ্ঞরা মানছেন না। তাঁদের মতে, শরীরচর্চা যেমন দরকারি, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ হলো কী খাচ্ছেন আপনি। খাদ্য তালিকায় যদি ঠিক খাবারগুলো থাকে, তাহলে অনেক রোগ থেকেই নিজেকে রক্ষা করা সম্ভব।
১. টমেটো: হৃদপিণ্ডের ছাতা
টমেটোতে রয়েছে লাইকোপিন নামক একটি উপাদান, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্ট থাকে সুস্থ, রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত টমেটো খাওয়া মানেই হৃদরোগ থেকে নিজেকে অনেকটা সুরক্ষিত রাখা।
২. আখরোট: ব্রেনের টনিক
আখরোটকে বলে ব্রেন ফুড। এতে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। মনোযোগ বাড়ায়, স্মৃতিশক্তিকে করে প্রখর। অফিসে বা পড়াশোনায় যারা মন বসাতে পারেন না, তাঁদের জন্য দারুণ কার্যকর এই বাদাম।
৩. রাজমা: রক্ত ও কিডনির রাখাল
রাজমা দেখতে যেমন কিডনির মতো, তেমনি কাজও করে কিডনিকে সুস্থ রাখার জন্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা শরীরের টক্সিন বের করে দেয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটা খুব উপকারী।
৪. মিষ্টি আলু: মিষ্টি খাবার, উপকার বেশি
মিষ্টি আলু একটি লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার, অর্থাৎ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বাড়িয়ে দেয় না। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষগুলিকে সুস্থ রাখে। প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এটি বিশেষভাবে কার্যকর।
৫. গাজর: চোখের যত্নে অনন্য
গাজর ভরপুর বিটা-ক্যারোটিনে, যা শরীরে ভিটামিন-এ তে পরিণত হয়। এটি চোখের জন্য খুব ভালো। যাঁরা দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের সামনে কাজ করেন, তাঁদের জন্য গাজর এক প্রাকৃতিক দাওয়াই।
৬. আদা: হজমের হিরো
আদা এমন একটি উপাদান, যা পাকস্থলীর যত্ন নেয় চুপচাপ। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, গ্যাস-অম্বল কমায় এবং খাবার হজমে সহায়ক। এক কাপ আদা-চা খেলে পেট থাকবে হালকা আর মেজাজ থাকবে ফুরফুরে।
৭. আঙুর: ফুসফুসের রক্ষাকবচ
আঙুরে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভোনয়েড, যা ফুসফুসের কোষগুলিকে রক্ষা করে। ধূমপান করেন বা দূষণে থাকেন বেশি, তাঁদের জন্য আঙুর খুব উপকারী। এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা কমায় এবং ফুসফুসকে করে আরও সবল।
উল্লেখ্য, সুস্থ থাকতে শুধু ওষুধ নয়, দরকার খাদ্যতালিকায় কিছু ছোট ছোট পরিবর্তন। এই খাবারগুলো রাখলে শরীর ভিতর থেকে শক্তিশালী হবে। তাই শরীরচর্চার পাশাপাশি আজ থেকেই শুরু করুন স্বাস্থ্যকর খাওয়া।