নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা আজকের রাজনীতিতে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ব্যতিক্রম ঘটালেন পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ ও অভিনেত্রী জুন মালিয়া। ভোটের সময় যা বলেছিলেন, তা এবার বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন তিনি।
পাথরায় প্রতিশ্রুতি, এবার বাস্তবায়নের পালা
মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত পাথরা গ্রাম—যে গ্রামটিকে ঘিরে রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অমূল্য স্থাপত্য। এখানকার ৩৪টি ছোট-বড় মন্দির স্থানীয় পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলেও, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে ছিল গ্রামটি। ভোট প্রচারে এসে জুন মালিয়া এলাকাবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, জয়ী হলে উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দেবেন পাথরায়।
২০২৫ সালে সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে এলেন তিনি নিজেই। এলাকায় এসে জানালেন, “এই মন্দিরময় এলাকায় এসে আমি নিজেও অভিভূত। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করে একটি সুন্দর পার্ক ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে এখানে।”
পরিকাঠামোর হাল বদলাচ্ছে
পাথরার প্রধান সমস্যা ছিল পর্যাপ্ত থাকার জায়গার অভাব এবং পর্যটকদের জন্য সন্ধ্যার পর কোনো নিরাপদ ঘোরার পরিবেশ না থাকা। জুন মালিয়া জানিয়েছেন, এই সমস্যাগুলোর সমাধানে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নদীর ধারে থাকা পুরোনো পার্কটিকে পুনরুদ্ধার করে নতুন করে সাজানো হচ্ছে।
স্থানীয় মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি নজর দেওয়া হোক এই ঐতিহাসিক এলাকায়। কিন্তু সেই বিষয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের সুর শোনা যাচ্ছে গ্রামবাসীর কণ্ঠে। রাজ্য সরকার এবং সাংসদের এই উদ্যোগ তাই আশার আলো দেখাচ্ছে সবাইকে।
পর্যটনের নতুন মানচিত্রে পাথরা?
মেদিনীপুর শহর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরের এই ঐতিহাসিক স্থান পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিতে পারে যদি যথাযথ প্রচার ও রক্ষণাবেক্ষণ হয়। গ্রামবাসীর আশা, সংস্কার কাজ সম্পূর্ণ হলে এই জায়গাটি হয়ে উঠবে মেদিনীপুর তথা পশ্চিমবঙ্গের এক উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র।
জুন মালিয়ার এই উদ্যোগ শুধু একটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষার নিদর্শন নয়, বরং এটি একটি সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ, একটি হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যের প্রতি দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।