আজ, ১ জুন ২০২৫, বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হয়েছে জামাইষষ্ঠী। এটি একটি আবেগঘন বাঙালি ঐতিহ্য যেখানে জামাইদের রাজকীয়ভাবে আপ্যায়ন করা হয়। ঠিক এমন এক দিনে বাংলায় উপস্থিত হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার রাতেই কলকাতায় পা রাখেন তিনি। রবিবার সকালে একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচি সেরে দুপুরে জমজমাট মধ্যাহ্নভোজ সারেন বাইপাসের ধারের একটি বিলাসবহুল হোটেলে।
শাহি মধ্যাহ্নভোজে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া
জানা গিয়েছে, অমিত শাহের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয় এক বাঙালি রেসিপিতে ভরপুর ‘শাহি থালা’। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ আরও অনেক বিজেপি নেতা।
মধ্যাহ্নভোজে যে সমস্ত খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল:
-
বাসমতি চালের সাদা ভাত
-
গরম গরম রুটি
-
ভেজিটেবল ডাল ও স্যালাড
-
শাক ও তিন রকম ভাজা – বেগুন, ভেন্ডি (ঢেঁড়স), আলু
-
ধোকার ডালনা – নিরামিষ খাওয়ার মাঝে অন্যতম জনপ্রিয় পদ
-
এঁচোড় কাটলেট – মাংসের স্বাদে নিরামিষের আকর্ষণ
-
পটলের দোর্মা – মসলাদার নিরামিষ ভরপুর পদ
-
কাসুরি মেথি আলুর দম ও পনির – আধুনিক ও বাঙালি রান্নার মেলবন্ধন
মিষ্টিমুখেও ছিল ভরপুর আয়োজন
মধ্যাহ্নভোজের শেষে যে কোনও বাঙালি ভোজ সম্পূর্ণ হয় মিষ্টিমুখ ছাড়া, তা তো সবাই জানে। অমিত শাহের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শেষ পাতে ছিল:
-
রসগোল্লা
-
মিষ্টি দই
-
জলভরা সন্দেশ
-
গোলাপি রঙের টক-মিষ্টি আম
সর্বোপরি এই মেন্যু শুধু মন্ত্রীকে নয়, বাঙালি সংস্কৃতির স্বাদকেও তুলে ধরল জাতীয় স্তরে।
খাওয়ার পরই সভা, তৃণমূলকে তোপ শাহর
মধ্যাহ্নভোজ সেরে অমিত শাহ সরাসরি রওনা দেন নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের একটি বিশাল কর্মীসভায়। সেখানে উপস্থিত হাজার হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “২০২৬-এ বাংলায় পরিবর্তন হবেই, এই সরকার যাবে।” শুভেন্দু অধিকারীও সরব হন সভায়। তাঁর ভাষায়, “হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বদলা হবে। হীরক রানিকে বাই বাই করতে হবে।”
সুকান্ত মজুমদার আবার উল্লেখ করেন পুরনো বক্তব্য—‘অপারেশন বাংলা’।
উৎসব ও রাজনীতি—দুয়ের মিশেলে শাহর সফর
এই সফরের রাজনৈতিক তাৎপর্য থাকলেও, বাংলার সংস্কৃতির স্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রাখেননি অমিত শাহ। বাঙালি রান্নার স্বাদ, জামাইষষ্ঠীর গুরুত্ব এবং আতিথেয়তার এমন নিদর্শন নিঃসন্দেহে নজর কাড়ে। এ যেন একফাঁকে উৎসব ও রাজনীতির মেলবন্ধনের দিন!