TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

“আপনার সময় শেষ, দিদি”— নেতাজি ইন্ডোর থেকে বাংলায় রাজনৈতিক ভূমিকম্প ঘটিয়ে গেলেন অমিত শাহ

নেতাজি ইন্ডোর থেকে তৃণমূল সরকারকে সরিয়ে বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের ডাক দিলেন অমিত শাহ। বললেন, “২০২৬-এ বাংলায় পরিবর্তনের পালা আবার আসবে।” অপারেশন সিঁদুর, রাজনৈতিক হিংসা ও মমতার তুষ্টিকরণ নিয়েও তীব্র আক্রমণ।

Debapriya Nandi Sarkar

রবিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক রাজনৈতিক সভায় অংশ নিয়ে কার্যত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আগুন ধরিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করাই নয়, তাঁর বক্তব্য ছিল স্পষ্ট: ২০২৬ সালে রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল হবে, আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবে বিজেপি। “দিদি, আপনার সময় শেষ। বাংলার মানুষ এবার পরিবর্তন চায়,”—এই বার্তার মধ্য দিয়েই শাহ স্পষ্ট করে দেন বিজেপি-র লক্ষ্য।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

“২০২৬-এ বিজেপি সরকার, মুখ্যমন্ত্রী হবেন আমাদেরই”

ভোটের দুই বছর আগেই বাংলায় সরকার গঠনের ইঙ্গিত দিয়ে অমিত শাহ বলেন, “আপনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) রাজত্ব শেষ হতে চলেছে। বাংলার মানুষ এবার গণতন্ত্র ও শান্তি চায়। তৃণমূল সরকারের পতনের পর যারা আমাদের কর্মীদের খুন করেছে, তাদের পাতাল থেকেও টেনে বের করে শাস্তি দেব।” তিনি আরও বলেন, “আজ গোটা দেশে নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়। কিন্তু বাংলায় এখনও রিগিং, বোমা, খুন—সব চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু।”

অপারেশন সিঁদুর ঘিরে নারীভোটের মন জয়ের চেষ্টা

কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার ঘটনার পর মোদী সরকার ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায়। সেটিকেই হাতিয়ার করে এদিন মহিলা ভোটারদের আবেগে কৌশলে নাড়া দেন শাহ। তিনি বলেন, “পাক জঙ্গিরা হিন্দু পর্যটকদের ধর্ম দেখে মেরেছে। আর মোদীজি অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন।” শাহের অভিযোগ, “মমতাদিদির এতে আপত্তি! কেন? কারণ তিনি সবসময় তুষ্টিকরণ করেন। কিন্তু এ বার বাংলার মা-বোনেরা বুঝিয়ে দেবেন—সিঁদুরের অপমান করলে কতটা মূল্য চোকাতে হয়।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

ব্যক্তিগত আক্রমণে সরব অমিত শাহ

সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বলেন, “সিঁদুর বিক্রি করছেন, অথচ নিজের স্ত্রীর সিঁথিতে সিঁদুর দেননি।” এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে শাহ বলেন, “এই কথা বলে দিদি শুধু মোদীজিকে নয়, দেশের মা-বোনদের আবেগের অপমান করেছেন। এই অপমানের উত্তর দেবে বাংলার নারীরা।”

“কমিউনিজম থেকে দুর্নীতির দিকে—বাংলার পতনের ইতিহাস”

শাহ মনে করিয়ে দেন, “প্রথমে কমিউনিস্টরা বাংলাকে ডুবিয়েছে। তারপর মা-মাটি-মানুষের নামে এসেছিলেন মমতা। আর এখন বাংলা হয়ে উঠেছে দুর্নীতি, হিংসা, বোমা, অনুপ্রবেশকারীর ঘাঁটি। এই বাংলা তো রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নজরুলের বাংলা! এভাবে চলতে পারে না।”

বিজেপি-র রণকৌশল ও লক্ষ্য

শাহের বক্তব্যে স্পষ্ট ছিল, বাংলায় বিজেপি এবার আর শুধু আক্রমণ নয়, পরিকল্পনা করে রণকৌশল সাজিয়ে এগোচ্ছে। ভোট ময়দানে পা রাখার আগেই তিনি ঘোষণা করলেন, “আমরা প্রতিটি ব্লকে পৌঁছব। পরিবর্তন হবেই। বাংলায় গেরুয়া পতাকা উড়বেই।”

রাজনৈতিক ভাষায় বললে, রবিবার কলকাতা থেকে বাংলায় নির্বাচনের ঘণ্টাধ্বনি বাজিয়ে দিলেন অমিত শাহ। বক্তৃতায় যেমন ছিল হুঙ্কার, তেমনই ছিল আবেগের ডাক। ২০২৬ সালে বাংলার মাটিতে বিজেপি প্রথমবার সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে, আর সেই স্বপ্ন সফল করতে বিজেপি যে এবার আর কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল নেতাজি ইন্ডোরের সভায়।