বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক—G7 সামিট। এই শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির কাছে যেমন সম্মানের, তেমনই প্রভাব বিস্তারের সুযোগ। তবে এবার কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য G7 সামিট ঘিরে ভারতের অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সম্মেলনে অংশ নাও নিতে পারেন। তবে সরকারিভাবে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য আসেনি।
ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতিই কি বড় কারণ?
গত কয়েক মাসে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক যথেষ্ট তলানিতে এসে ঠেকেছে। খালিস্তানপন্থী কার্যকলাপ, ভারত-বিরোধী উসকানিমূলক মন্তব্য, ভারতীয় দূতাবাস ও কনসুলেট কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ইত্যাদি নানা বিষয়ে একাধিকবার দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত বচসা হয়েছে। বিশেষত, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কিছু মন্তব্যে ভারত প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই টানাপোড়েনের আবহেই এবার কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে চলা G7 সামিটে প্রধানমন্ত্রী মোদীর না যাওয়ার সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ‘পলিটিকাল স্টেটমেন্ট’ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
বিশ্বমঞ্চে ভারতের অনুপস্থিতি—কী বার্তা দিচ্ছে?
ভারত এখন বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি। ভূরাজনীতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে ভারতের অবস্থান আজও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক। G7 সামিটে মোদীর উপস্থিতি থাকলে তা অনেক সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলতে পারত। সেই জায়গা থেকে ভারতের এই সম্ভাব্য অনুপস্থিতি আন্তর্জাতিক মহলে নানান প্রশ্ন তুলতে পারে। অনেকেই বলছেন, মোদীর অনুপস্থিতি কানাডাকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে পারে—যে ভারত এখন আর সবকিছু চুপচাপ সহ্য করবে না। ভারতের অবস্থান এবং সম্মান নিয়ে কোনও আপস নয়, এমনটাই হয়তো বুঝিয়ে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদেশনীতির এক নতুন অধ্যায়?
গত এক দশকে নরেন্দ্র মোদীকে বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দেখা গিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, ফ্রান্স—সকলেই ভারতের সঙ্গে গভীর কৌশলগত বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছে। কিন্তু এবার, যখন কূটনৈতিক ভাবে সম্পর্ক উত্তপ্ত, তখন মোদীর এই G7 সামিট এড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত এক নতুন বিদেশনীতির সূচনা কি না, তা সময়ই বলবে।
এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়, নজর দিল্লির ঘড়ির কাঁটায়
যদিও ভারত সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। সরকার চাইছে, ভারতের ভাবমূর্তি যাতে কোনওভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং বার্তাটি যাতে সঠিকভাবে পৌঁছায়। সেই অনুযায়ীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।