TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

দিল্লির পার্কে অর্ধদগ্ধ দেহ! প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে নৃশংস হত্যা, বিস্তারিত পড়ুন

দিল্লির সঞ্জয় বন পার্কে প্রকাশ্যে প্রেমঘটিত খুনের ঘটনা। প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক অর্শকৃত ছুরি চালিয়ে খুন করে মেহেক জৈনকে, এরপর আগুন ধরিয়ে দেয় দেহে। সমাজে আবারও প্রশ্ন তুলল নারীর নিরাপত্তা ও মানসিক বিকৃতি।

Debapriya Nandi Sarkar

দিল্লির বুকে আবারও রক্তাক্ত ভালোবাসা। এই শহর বহুবার প্রেম-ঘৃণা-প্রতিহিংসার সাক্ষী থেকেছে। এবার মেহরৌলির সঞ্জয় বন পার্ক রইল এক নারকীয় খুনের চাক্ষুষ প্রমাণ হয়ে। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে এক যুবক নিজের প্রাক্তন প্রেমিকাকে ডেকে এনে প্রকাশ্যে ছুরি চালিয়ে খুন করে। মৃত্যুর পরও শান্ত হয়নি সে। দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, যাতে শনাক্ত করা না যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত তরুণীর নাম মেহেক জৈন (২৫)। বাড়ি দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে। অভিযুক্ত যুবক অর্শকৃত (২৭), সে রানিবাগ এলাকার বাসিন্দা।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

খুনের দিন কী ঘটেছিল?

ঘটনাটি ঘটে সোমবার সন্ধ্যায়। অর্শকৃত ফোন করে মেহেককে দেখা করতে বলে সঞ্জয় বন পার্কে। মেহেক রাজি হয়। তারা পার্কের নির্জন কোণে হাঁটতে হাঁটতে চলে যায়। হঠাৎই অর্শকৃত একটি ধারালো ছুরি বের করে এবং এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে মেহেককে। রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন মেহেক। এরপর তার শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে অর্শকৃত। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটির মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই।

লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা

খুনের পর অভিযুক্ত থেমে থাকেনি। নিজের ব্যাগ থেকে পেট্রোল বের করে তরুণীর নিথর দেহে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় সে। উদ্দেশ্য ছিল—তরুণীর পরিচয় যেন কেউ বুঝতে না পারে। কিন্তু পার্কে কিছু লোকজন ধোঁয়া দেখতে পেয়ে সন্দেহ করে এবং পুলিশে খবর দেয়। দিল্লি পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয় এবং সেই সঙ্গে শুরু হয় জোর তদন্ত।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

তদন্তে বেরিয়ে এল ভয়াবহ প্রেমঘটিত প্রতিশোধের গল্প

পুলিশ জেরায় অর্শকৃত জানায়, একসময় তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মেহেকের পরিবার সেই সম্পর্ক মানতে চায়নি। পরিবারের চাপে মেহেক সম্পর্ক থেকে সরে আসে। এই প্রত্যাখ্যান অর্শকৃত কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। এরপর থেকেই সে একাধিকবার মেহেককে ফোন করে বিরক্ত করত, কখনও হুমকি দিত বলেও অভিযোগ। শেষমেশ, প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেয়—মেহেককে হত্যা করে চিরতরে মুছে দিতে চায় তার অস্তিত্ব।

ধৃত অর্শকৃত, দায় স্বীকার করেছে

ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ অর্শকৃতকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে খুনের কথা স্বীকার করে এবং পুরো ঘটনা বর্ণনা দেয়। তার বিরুদ্ধে IPC-র একাধিক ধারায় খুন, পরিকল্পিত খুন এবং প্রমাণ নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পরিবার শোকস্তব্ধ, উঠছে প্রশ্ন প্রশাসনের দিকে

মেহেকের পরিবার এখনও স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ। তাদের প্রশ্ন—একটি ছেলেকে দূরে সরাতে গিয়ে কেন এই পরিণতি? মেয়েরা কি নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আর ‘না’ বলতেও পারবে না? ঘটনাস্থল ছিল জনসমক্ষে, অথচ এমন নৃশংস ঘটনা ঘটল—প্রশাসন ও পুলিশি টহলের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। মেহেক জৈনের মৃত্যু শুধু একটি প্রেমঘটিত খুন নয়, এটি আরও একবার আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল—প্রেম, যখন মানসিক অসুস্থতার রূপ নেয়, তখন তা হয়ে ওঠে মৃত্যুর কারণ। সমাজের দায়িত্ব প্রেমের নামে বিকৃত মানসিকতা চেনা ও প্রতিরোধ করা। না হলে আরও অনেক মেহেক হয়তো হারিয়ে যাবে এমন রক্তাক্ত নীরবতায়।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।