TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Kolkata crime: চুরি না কি অন্য ফাঁদ? কারখানার অন্ধকার ঘরে কিশোরকে উল্টো ঝুলিয়ে ইলেকট্রিক শক, নিখোঁজ এখনও!

মহেশতলার একটি জিন্স কারখানায় চুরির অভিযোগ তুলে ১৪ বছরের এক কিশোরকে উল্টো ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ও দেওয়া হয় বিদ্যুৎস্পৃষ্টের শাস্তি। দু’জন গ্রেপ্তার হলেও কিশোরের হদিশ নেই, পলাতক মূল অভিযুক্ত।

Debapriya Nandi Sarkar

Kolkata crime : কলকাতার মহেশতলায় ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ও বিভীষিকাময় ঘটনা। মাত্র ১৪ বছর বয়সের এক কিশোরকে চোর সন্দেহে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং ইলেকট্রিক শক দেওয়া হয়—এমনই মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে এক জিন্স কারখানার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে দুই কর্মী। তবে এখনও পলাতক মূল অভিযুক্ত, কারখানার মালিক শাহেনশা। নিখোঁজ কিশোরেরও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কী ঘটেছিল সেদিন?

ইসলামপুর থানার ছোঘরিয়া এলাকার দুই ভাইকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে মহেশতলার একটি কারখানায় নিয়ে এসেছিলেন শাহেনশা নামের এক ব্যবসায়ী। কথিতভাবে, এই কারখানায় জিন্সের প্যান্ট ওয়াশ করা হয়। দুই ভাই গত দু’মাস ধরে সেখানে শ্রম দিচ্ছিল। সম্প্রতি, এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগ ওঠে। এরপরই শুরু হয় নির্যাতনের ভয়াবহ পর্ব। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কিশোরকে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা হয়। ওই ভয়ঙ্কর ঘটনার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যদিও তার সত্যতা এই সময় অনলাইন যাচাই করেনি।

পরিবারের অভিযোগ ও প্রতিবাদ

যখন সেই ভিডিয়ো কিশোরের পরিবারের হাতে পৌঁছয়, তখন তাঁরা কার্যত শিউরে ওঠেন। তৎক্ষণাৎ পরিবারের তরফে রবীন্দ্রনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ তদন্তে নামে এবং মঙ্গলবার রাতে মহেশতলা থেকে মোস্তাফা কামাল ও তৌহিদ আলম নামে দু’জনকে আটক করে। বুধবার সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। দু’জনই মূল অভিযুক্ত শাহেনশার ঘনিষ্ঠ বলেই খবর। তবে এখনও পর্যন্ত কিশোরের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি, যা উদ্বেগের মূল কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

উত্তাল এলাকাবাসী, পথে নামলেন প্রতিবাদীরা

ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইসলামপুরের মাটিকুন্ডা এলাকায় শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারি ও নিখোঁজ কিশোরকে খুঁজে বের করার দাবিতে রাস্তায় নামেন সাধারণ মানুষ। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন। প্রশাসনের তরফে কোনও সুরাহা না মিললে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।

পলাতক শাহেনশা, খুঁজছে পুলিশ

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত তথা কারখানার মালিক শাহেনশা পলাতক। তার সন্ধানে চলছে চিরুনি তল্লাশি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিশোর নিখোঁজ থাকা এবং এমন ভয়ঙ্কর নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

শিশুশ্রম না কি অন্য কিছু?

এই ঘটনায় আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে শিশুশ্রম এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের শ্রমিক হিসেবে কাজে নিযুক্ত করার প্রথা। মাত্র ১৪ বছর বয়সে কাজ, তার ওপর নির্যাতন—এ সবই এক ভয়ানক সমাজ বাস্তবতার ইঙ্গিত দেয়। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, দরকার কঠোর নজরদারি ও সচেতনতা।

একটি কিশোর নিখোঁজ। তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। অথচ তাকে এমন নিষ্ঠুরভাবে শাস্তি দেওয়া হল? এই ঘটনায় যে প্রশ্নগুলো উঠছে—সেগুলোর উত্তর শুধু পুলিশের কাছেই নয়, সমাজের প্রতিটি সচেতন মানুষের কাছেও জরুরি। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরকে দ্রুত খুঁজে বের করা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।