USA Travel Ban : “বিপজ্জনক বিদেশী ব্যক্তিদের হাত থেকে আমেরিকানদের রক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ,”—এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউস ঘোষণা করল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নতুন নির্বাহী আদেশের কথা। এই নির্দেশ অনুযায়ী, বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের উপর আমেরিকায় প্রবেশে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
কোন কোন দেশের নাগরিকরা পড়েছেন নিষেধাজ্ঞার আওতায়?
এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে—
- আফগানিস্তান
- বার্মা (মায়ানমার)
- চাদ
- কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
- নিরক্ষীয় গিনি
- ইরিত্রিয়া
- হাইতি
- ইরান
- লিবিয়া
- সোমালিয়া
- সুদান
- ইয়েমেন
এই দেশগুলিকে হোয়াইট হাউস “উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল বলেই জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা নাকি রাজনৈতিক বার্তা?
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বে অভিবাসনকে বড় ইস্যু করতেই আবারও কঠোর অবস্থানে ফিরলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় থেকেই অভিবাসন নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। ২০১৭ সালেও তিনি কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বের নানা মানবাধিকার সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
কোন পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত?
সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বেআইনি অনুপ্রবেশ বেড়েছে। হোয়াইট হাউসের দাবি, “বিশ্বের কিছু অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও সরকারের ব্যর্থতা আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।”এই ১২টি দেশকে তাই ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেই’ এমন অঞ্চল বলেই চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর সেই কারণেই নিষেধাজ্ঞা।
মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি কোথায়?
এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, “যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ ও দারিদ্র্যে জর্জরিত দেশগুলোর সাধারণ মানুষ আশ্রয়ের আশায় আমেরিকায় যেতে চায়। ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা সরাসরি তাদের জীবন ও ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলবে।”
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা হ্রাস পাবে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমেরিকার মানবিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা?
এই আদেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞরা। অতীতে এমন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারও করতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের এই নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার অজুহাতে কিছু দেশকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে, অন্যদিকে এটি অভিবাসন নীতিকে ঘিরে আবারও আন্তর্জাতিক বিতর্ক উসকে দিচ্ছে। এখন দেখার, এই নিষেধাজ্ঞা কতটা কার্যকর হয়, আর কতখানি রাজনৈতিক প্রভাব ফেলে বিশ্ব রাজনীতিতে।
#BREAKING US President Donald Trump has signed a new travel ban blocking people from 12 countries to “protect Americans from dangerous foreign actors”, the White House says.
The ban targets nationals of Afghanistan, Burma, Chad, Republic of the Congo, Equatorial Guinea, Eritrea,… pic.twitter.com/q7ZiCX8nSD
— AFP News Agency (@AFP) June 5, 2025