Krishak Bandhu Scheme : পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে রাজ্য সরকার চালু করেছিল ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প। প্রতি বছর রবি ও খরিফ মরসুমে কৃষকদের হাতে পৌঁছে যায় আর্থিক সহায়তা। কিন্তু এবারে এই প্রকল্পে এসেছে বড় পরিবর্তন। ঘোষণা হয়েছে—সবার আগে টাকা পাবেন নির্দিষ্ট কিছু কৃষক। বাকিদের জন্য জারি হয়েছে সতর্কতা ও সময়সীমা।
কী এই কৃষক বন্ধু প্রকল্প?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প ‘কৃষক বন্ধু’। মূলত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে, বছরে দু’বার সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় টাকা। এখন প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা বছরে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত সহায়তা পান। রবি ও খরিফ মরসুম ধরে সেই টাকা পাঠানো হয় দুই কিস্তিতে।
নতুন নিয়ম কী বলছে?
এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিবারের মতোই এবারও কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে। কিন্তু এবার টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে জারি হয়েছে নতুন নির্দেশিকা। কৃষি দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, যারা আগে থেকেই তাদের জমির কাগজপত্র, আধার ও ব্যাঙ্ক তথ্য জমা দিয়েছেন এবং যাদের ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ, তারাই আগে টাকা পাবেন।
অন্যদিকে, নতুন করে যারা এই প্রকল্পে আবেদন করেছেন, বা যাদের নথিপত্র এখনও অসম্পূর্ণ, তাদের জন্য অর্থপ্রদানে বিলম্ব হতে পারে। ফলে একাংশ আগে টাকা পেলেও, আরেক অংশকে অপেক্ষা করতে হতে পারে নির্ধারিত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত।
কীভাবে জানা যাবে কার টাকা এসেছে?
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, কৃষকরা তাদের ব্যাঙ্ক পাসবই আপডেট করে দেখে নিতে পারেন টাকা এসেছে কি না। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ কৃষি দপ্তরের অফিসিয়াল পোর্টালে গিয়ে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাসও দেখা যাবে।
এছাড়াও স্থানীয় কৃষি অফিস বা পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যেতে পারে। অনেক জেলায় SMS মারফতও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে।
সময়সীমার মধ্যে আবেদন জরুরি
যে কৃষকরা এখনও আবেদন করেননি বা তাদের নথি অসম্পূর্ণ, তাদের ১৫ জুনের মধ্যে সমস্ত তথ্য আপলোড করে ফর্ম সাবমিট করতে বলা হয়েছে। না হলে তাঁরা এই কিস্তির টাকা নাও পেতে পারেন।
বিশেষ করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আধার সংযুক্ত না থাকলে, সেই অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
কৃষকদের উদ্বেগ ও আশ্বাস
নতুন নিয়মে অনেক কৃষকের মধ্যে চিন্তা তৈরি হয়েছে। যাঁদের জমির পাট্টা নেই, বা যাঁরা নতুন আবেদনকারী, তাঁদের কাছে প্রশ্ন—তাহলে কি এই কিস্তির টাকা মিলবে না?
সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কেউ বঞ্চিত হবেন না। শুধু কিছুটা দেরি হতে পারে, তবে তথ্য যাচাই হলেই বাকি সকলের অ্যাকাউন্টেও টাকা পাঠানো হবে পর্যায়ক্রমে।
সরকারের তরফে বার্তা
কৃষি দপ্তরের পক্ষ থেকে রাজ্যের সমস্ত কৃষকদের উদ্দেশ্যে বার্তা পাঠানো হয়েছে—“আবেদনকারী কৃষকদের যেন যথাসময়ে সমস্ত নথি জমা দেওয়া হয়। প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে তথ্য যাচাই একান্ত প্রয়োজন। তাই দয়া করে দেরি না করে আবেদন সম্পূর্ণ করুন।”
উল্লেখ্য, এই আপডেট নিঃসন্দেহে একদিকে যেমন দিচ্ছে কিছু কৃষকের মুখে হাসি, তেমনই অন্যদিকে বাকিদের জন্য তুলে ধরছে সময়মতো পদক্ষেপের গুরুত্ব। কৃষক বন্ধু প্রকল্প যেমন আর্থিক সহায়তার দিক থেকে বড় ভরসা, তেমনই তার সুফল পেতে গেলে সরকারের নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলা জরুরি।