Indian Air Force : ভারতের সীমান্তে এখন সর্বক্ষণই চাপা উত্তেজনা। চিন হোক বা পাকিস্তান—শত্রুদের গতিবিধি নজরে রাখতে আরও উন্নত নজরদারির প্রয়োজন বহুদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছিল। সেই লক্ষ্যেই এবার দেশেই তৈরি হতে চলেছে অত্যাধুনিক গুপ্তচর বিমান আইস্টার (I-STAR)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য তিনটি I-STAR বিমান কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র বড় সাফল্য, খরচ প্রায় ১০ হাজার কোটি
প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পে এই বিমানগুলি তৈরি করবে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা DRDO। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে তৈরি হওয়া এই বিমানগুলি শুধু নজরদারিই নয়, ভবিষ্যতে শত্রু ঘাঁটিতে নিখুঁত হামলার পরিকল্পনাও নির্ভুল করে তুলবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কমিটি (DAC) চলতি মাসেই এই প্রকল্পে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দিতে চলেছে।
কী আছে এই গুপ্তচর বিমানে?
আইস্টার-এর পূর্ণ রূপ—Intelligence, Surveillance, Target Acquisition and Reconnaissance। এই প্লেন মূলত ‘এয়ার-টু-গ্রাউন্ড ইন্টেলিজেন্স’ সরবরাহ করবে। অর্থাৎ— শত্রুর রাডার স্টেশন, এয়ার ডিফেন্স ইউনিট ও সেনা ছাউনি বা অস্ত্রঘাঁটি— সবকিছুর উপর নিখুঁত নজর রেখে, সেগুলিতে হামলার রুট ও সময় ঠিক করতে সাহায্য করবে এই বিমান। অত্যাধুনিক ক্যামেরা ও সেন্সরে ভরপুর I-STAR বিমান আকাশ থেকে জমির গভীরে শত্রুর গতিবিধি ধরতে পারবে।
DRDO-এর সফল পরীক্ষা, এবার সামরিক প্রয়োগ
DRDO-র Centre for Airborne Systems বিভাগের বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই I-STAR-এর সফল পরীক্ষামূলক উড়ান সম্পন্ন করেছেন। এর ফলে শুধু সীমান্তবর্তী এলাকাই নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত, গালওয়ান, ডোকলামের মতো স্পর্শকাতর জায়গাগুলিতে নজরদারির শক্তি বহুগুণে বাড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্পাই প্লেন পাক-অধিকৃত কাশ্মীর বা চিনা সীমান্তে বিপুল পরিবর্তন আনবে নজরদারির কৌশলে। শুধু পর্যবেক্ষণ নয়, যুদ্ধে রিয়েল টাইম টার্গেটিং ডেটা সরবরাহ করে অস্ত্রচালনার নির্ভুলতা বাড়াবে।
পাকিস্তান ও চিনের ঘুম কেড়ে নেবে এই বিমান?
বর্তমানে পাকিস্তান ও চিন, দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের সীমান্তে টানাপোড়েন চলছে। চিন লাদাখে রোজই বাহিনী বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তান অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছে বলেই অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে যদি ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এমন আধুনিক নজরদারি প্রযুক্তি আসে, তাহলে দুই প্রতিবেশীর দুশ্চিন্তা যে বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ‘Surveillance Superiority’ পাবে ভারত। যুদ্ধক্ষেত্রে এটি বড় ফারাক গড়ে দেবে।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকাঠামোয় ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প যে সত্যিই রূপ নিচ্ছে, তার বড় প্রমাণ হতে চলেছে এই I-STAR প্রকল্প। এবার শুধু দেখার, কবে নাগাদ এই বিমানগুলি বায়ুসেনার হাতে পৌঁছয় এবং তারা কতটা কার্যকর হয় সীমান্তে।