TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Smart Meter : মুখ্যমন্ত্রীর ‘না’-তেই পুরোপুরি বাতিল স্মার্ট মিটার! বিধানসভায় বিস্ফোরক ঘোষণা অরূপের

বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ স্থগিত নয়, একেবারেই বাতিল! বিধানসভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্যে ফের চাপে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই নেওয়া হল এই সিদ্ধান্ত।

Debapriya Nandi Sarkar

Smart Meter : কলকাতার গরম দুপুরে যখন বিধানসভায় নানা বিষয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে, ঠিক তখনই চমকে দেওয়া ঘোষণা করলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বললেন, “স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থগিত নয়, বাতিল।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে জানান তিনি।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

এ যেন রাজ্যের বিদ্যুৎনীতিতে বড়সড় মোড়। কারণ, এতদিন পর্যন্ত জানানো হচ্ছিল স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ ‘অস্থায়ীভাবে স্থগিত’। এবার তা সরকারি স্তরে বাতিলের ঘোষণায় রূপ নিল।

বিজেপির তোপে পাল্টা জবাব অরূপের

বিধানসভায় বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী একাধিক গেজেট নোটিফিকেশন তুলে ধরে বলেন, “আমার বিজেপি বন্ধুদের অভিযোগ আছে ঠিকই, কিন্তু তারা পুরো তথ্য জানেন না। কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে এই স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। আমরা সেটা মানিনি। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা ছিল—সাধারণ মানুষের ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপানো যাবে না।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

এই বক্তব্যে বিধানসভার অন্দরে দেখা দেয় শোরগোল। বিরোধীরা বলেন, এটি রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ঢাকার কৌশল মাত্র। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, “স্মার্ট মিটার রাজ্যের বিষয়, কেন্দ্র নয়। বিদ্যুৎমন্ত্রী অসত্য বলছেন।”

সাধারণ মিটারেই ফিরছে রাজ্য

বুধবারের এই ঘোষণার পর বিদ্যুৎ দফতরের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, যেসব বাড়িতে ইতিমধ্যেই স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে, সেগুলিও সাধারণ মিটারে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে আর কোনও গৃহস্থের বাড়িতে ডিজিটাল বা স্মার্ট মিটার বসবে না।

এছাড়া বাণিজ্যিক সংস্থা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।

স্মার্ট মিটার নিয়ে বিতর্কের শিকড় কোথায়?

স্মার্ট মিটার মূলত ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর, যেখানে রিডিং নেওয়া বা বিল তৈরি করার জন্য মিটার পাঠক আসেন না। এই ব্যবস্থা একদিকে যেমন আধুনিক, তেমনই গ্রাহকদের অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল—বিনা কারণে অতিরিক্ত বিল, রিডিংয়ের ত্রুটি, একতরফা বন্ধ বিদ্যুৎ সংযোগ ইত্যাদি।

গত মাসে উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক অঞ্চলে স্মার্ট মিটার নিয়ে বিক্ষোভের জেরে রাজ্যজুড়ে চাপে পড়ে বিদ্যুৎ দফতর। সেই চাপেই ধাপে ধাপে ‘পরীক্ষামূলক প্রয়োগ’ থেকে সরে এসে এখন পুরো বাতিলের পথে হাঁটল সরকার।

মানুষের স্বস্তি না বিভ্রান্তি?

বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বক্তব্যে বলা হয়েছে—“জনগণের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত।” তবে অনেকেই মনে করছেন, এত দিন ধরে যেভাবে কাজ চলছিল, তার পর হঠাৎ পুরো বাতিল ঘোষণা আসা মানে প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে অস্থিরতা। একাংশের দাবি, এতে সাধারণ মানুষ আরও বিভ্রান্ত হবেন।

তবে পরিষ্কার বার্তা দিলেন মন্ত্রী—“কেউ যেন আতঙ্কিত না হন। আগের নিয়মেই বিল যাবে, এবং কোনও স্মার্ট মিটার বসানো হবে না।”

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে রাজ্যজুড়ে স্মার্ট মিটার বিতর্কে মেরুকরণ স্পষ্ট। একদিকে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আবহ, অন্যদিকে জনমানসে আশঙ্কা ও স্বস্তি—দুয়েরই মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবু মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্তটি ‘স্থগিত’ থেকে এবার ‘স্থায়ী বাতিল’-এ রূপ নিল, এটাই আপাতত বড় বার্তা।