Digha Rath Yatra : দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান। অবশেষে দিঘা পেয়েছে তার নিজস্ব জগন্নাথ মন্দির। তার পরের ধাপে, ইতিহাসে প্রথমবার সেখানে আয়োজিত হতে চলেছে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র দিঘাকে ঘিরে এই ধর্মীয় আয়োজনকে কেন্দ্র করে রাজ্য প্রশাসন একপ্রকার কোমর বেঁধে নেমেছে প্রস্তুতিতে।
এই প্রথমবার, পুরীর ধাঁচে সমুদ্রতট সংলগ্ন স্থানে রথযাত্রার আয়োজন হতে চলায় যেমন রয়েছে ভক্তদের উৎসাহ, তেমনই রয়েছে প্রশাসনিক উদ্বেগ। তাই সবদিক সামলাতে নবান্নে আয়োজিত হলো একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।
মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রশাসনিক বৈঠক
আজ, বৃহস্পতিবার সকালে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসেন রাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। বৈঠকে ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, হোম সেক্রেটারি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা, পর্যটন ও পূজা বিভাগের আধিকারিকরাও। বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল রথযাত্রার নিরাপত্তা, জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, এবং পর্যটকদের সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
নজরদারি থাকবে সর্বোচ্চ স্তরে
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজে জানিয়েছেন, “এই রথযাত্রা শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি দিঘার পর্যটনকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার এক সুবর্ণ সুযোগ।” তাই প্রশাসনিক দিক থেকে কোনও খামতি রাখা চলবে না বলেই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে:
-
দিঘা জুড়ে থাকবে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি
-
ড্রোন ও সিসিটিভি-র মাধ্যমে চলবে চলাচলের উপর বিশেষ পর্যবেক্ষণ
-
পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হবে রথের যাত্রাপথ ও সমুদ্রতট এলাকায়
-
তৈরি থাকবে কুইক রেসপন্স টিম ও মেডিকেল ক্যাম্প
দিঘা জুড়ে বাড়তি পর্যটকের ঢল আশা
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রথযাত্রার সময় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হতে পারে দিঘায়। ফলে ট্রেন ও বাস পরিষেবায় বাড়তি সংখ্যা চালু করা হবে। হোটেল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার বিশেষ ছাড় ও প্যাকেজের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
ধর্মীয় আবেগের সঙ্গে প্রশাসনিক বাস্তবতা
একদিকে এই অনুষ্ঠান ধর্মীয় আবেগে মোড়া হলেও, অন্যদিকে এটি রাজ্যের পর্যটন উন্নয়নের অন্যতম ধাপ বলে মনে করছে নবান্ন। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে দিঘায় তৈরি হয়েছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। ইতিমধ্যেই জগন্নাথ মন্দির ও রথের সাজসজ্জা দেখতে ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রথম রথযাত্রা হিসেবে এটি শুধুমাত্র দিঘার নয়, গোটা রাজ্যের কাছেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আর তাই মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে এমন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক, যা স্পষ্ট করে দেয় রাজ্য প্রশাসন এই অনুষ্ঠানকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে। এখন শুধু অপেক্ষা, সেই শুভদিনের – যখন দিঘার বালিয়াড়িতে গড়াবে জগন্নাথের রথ, ইতিহাসের পথ ধরে।