TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

শেষ সেলফি! হাসিমুখেই যাত্রা শুরু, কয়েক মিনিটেই ছিন্নভিন্ন এক পরিবারের গল্প

উদয়পুরের চিকিৎসক দম্পতি কোমি ও প্রতীক যোশী তিন সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিমানে ওঠার আগে তোলা সেই শেষ সেলফিই হয়ে রইল তাঁদের জীবনের শেষ স্মৃতি। পড়ুন মর্মস্পর্শী সেই কাহিনি।

Debapriya Nandi Sarkar

উজ্জ্বল চোখ, ঝকঝকে হাসি। লন্ডনে নতুন জীবনের স্বপ্ন চোখে নিয়ে বিমানে উঠেছিলেন কোমি ব্যাস ও প্রতীক যোশী। সঙ্গে তাঁদের তিন সন্তান—মিরায়া, নকুল ও প্রদ্যুৎ। উদয়পুর থেকে আমদাবাদ হয়ে লন্ডনের পথে এয়ার ইন্ডিয়ার ওই বিমানে ওঠার ঠিক আগেই তুলেছিলেন একটি সেলফি। একপাশে কোমি ও প্রতীক, অন্যপাশে তিন খুদে—চোখেমুখে ভবিষ্যতের উচ্ছ্বাস, আশাবাদ। কিন্তু কে জানত, সেটাই তাঁদের জীবনের শেষ ছবি হয়ে থাকবে?

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেল সব

বৃহস্পতিবার সকালে আমদাবাদ বিমানবন্দরের রানওয়ে ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। বিমানে মোট ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন, এখনও পর্যন্ত কেবল একজনের প্রাণে বেঁচে যাওয়ার খবর মিলেছে। বাকিদের—যেমন কোমি ও তাঁর পরিবার—ফিরে আসার আর কোনও সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

স্বপ্নপূরণের ঠিক আগেই ছিন্নভিন্ন সংসার

কোমি এবং প্রতীক—দু’জনেই চিকিৎসক। এক সময় উদয়পুরের প্যাসিফিক হাসপাতালে কাজ করতেন একসঙ্গে। বছর দশেক আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। পরে প্রতীক চলে যান লন্ডনে, সেখানে গড়ে তোলেন নিজের প্র্যাকটিস। সম্প্রতি কোমি হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন স্বামীর সঙ্গে থাকতে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার। বাচ্চাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নেই শুরু হয়েছিল এই যাত্রা। অথচ সব শেষ হয়ে গেল কয়েক মুহূর্তেই।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

কোমি-প্রতীকদের শেষ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল

বিমানে ওঠার পর নেওয়া সেই সেলফি এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেখে বোঝার উপায় নেই যে এই পরিবারের জীবনে পরবর্তী মুহূর্তেই নেমে আসবে এক ভয়ঙ্কর পরিণতি। কোমি ও প্রতীক বসে রয়েছেন একদিকে, তাঁদের তিন সন্তান—মাত্র ৫ বছরের মিরায়া ও যমজ নকুল-প্রদ্যুৎ—অপরপাশে। কারও মুখে আতঙ্ক নেই, বরং ভবিষ্যতের স্বপ্নে ঝলমল করছে চোখ।

ভেঙে পড়েছেন পরিবার ও প্রতিবেশীরা

রাজস্থানের বানসওয়ারায় সম্প্রতি এসেছিলেন প্রতীক, পরিবারকে নিয়ে আবার লন্ডনে ফেরার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তাঁর মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন সকলেই এখন শোকে কাতর। প্রতিবেশীরা বলছেন, “শুনে বিশ্বাসই হচ্ছে না। কয়েকদিন আগেই হাসিমুখে কথা বলেছিলেন প্রতীক।” কোমির দিদি জানিয়েছেন, ভাইয়ের পড়াশোনায় দারুণ আগ্রহ ছিল। ছোট থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছে সে। এমন পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

প্রশ্ন অনেক, উত্তর অধরা

এত উন্নত প্রযুক্তির বিমান, অভিজ্ঞ পাইলট—তাও কেন এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ জানতে ‘ব্ল্যাক বক্স’ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তবে যাঁরা চিরতরে হারিয়ে গেলেন, তাঁদের আর ফিরে পাওয়া যাবে না।

শেষ আশার আলো নিভে গেল

লন্ডনে গিয়ে কোমি ও প্রতীকের নতুন সংসার শুরু হওয়ার কথা ছিল। বাচ্চাদের ভালো স্কুলে ভর্তি, নিজের মতো করে গুছিয়ে নেওয়া নতুন এক জীবন—সব পরিকল্পনাই ছিল। অথচ সেই নতুন জীবনের দরজায় পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু কেড়ে নিল সবকিছু। এক সেলফি এখন স্মৃতি হয়ে রইল—একটা গোটা পরিবারের শেষ মুহূর্তের সাক্ষ্য।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।