AC Bus Service : পশ্চিমবঙ্গবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণে আরও একবার বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চালু হল নতুন এসি বাস পরিষেবা—‘বাংলাশ্রী এক্সপ্রেস’। মূলত কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মধ্যে সোজা যোগাযোগ গড়ে তুলতেই এই প্রকল্পের সূচনা। এবার আর ট্রেনের জন্য অপেক্ষা নয়, দূরের জেলা থেকেও শহরে পৌঁছানো যাবে বিলাসবহুল AC বাসে চেপে।
বাস ছুটছে কলকাতা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত, সুবিধা পাচ্ছেন যাত্রীরা
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রুট হল কলকাতা-কোচবিহার। কলকাতা থেকে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে এই বাস পৌঁছে যাবে কোচবিহারে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। একইভাবে কোচবিহার থেকেও বিকেল ৫টায় ছাড়বে আর কলকাতায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে। মানে রাতভর আরামে ঘুমিয়ে পরদিন সকালবেলায় গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার অনন্য অভিজ্ঞতা।
বাসযাত্রীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ রাস্তায় এসি বাসে সফর যথেষ্ট আরামদায়ক, সময়ও বাঁচছে, সঙ্গে গতি ও পরিষেবাও প্রশংসনীয়।
একের পর এক রুট, জেলা জুড়ে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত
শুধু কোচবিহার নয়, একাধিক রুটে ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেছে বাংলাশ্রী এক্সপ্রেস। কলকাতা থেকে রওনা দিচ্ছে জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, শিলিগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা, বহরমপুর, সিউরি, আসানসোল, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বর্ধমান, চুঁচুড়া, কৃষ্ণনগর, বারাসাতের মতো বহু গন্তব্যে। এমনকি শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং যাওয়ার জন্যও থাকছে এই পরিষেবা।
এই পরিষেবার ফলে ছাত্রছাত্রী, কর্মজীবী, পর্যটকসহ বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। একদিকে যেমন সময় বাঁচছে, অন্যদিকে দুরত্ব কমছে জেলার সঙ্গে রাজধানীর।
সময় ও ভাড়ার দিকেও থাকছে নজর, যাত্রীদের সুবিধাই প্রধান লক্ষ্য
রাজ্যের পরিবহণ দফতর জানাচ্ছে, প্রতিটি রুটের নির্দিষ্ট সময় ও বাসভাড়া নির্ধারিত হয়েছে। যাত্রীদের আরাম এবং নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখেই প্রতিটি বাসে থাকছে আধুনিক ভলভো গাড়ি, প্রশিক্ষিত চালক ও সহায়ক, ক্লিন AC, পর্যাপ্ত লেগস্পেস, আরামদায়ক সিট।
যাঁরা এই পরিষেবায় ভ্রমণ করছেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে—এটি একেবারেই ট্রেনের বিকল্প হিসেবে ধরা যেতে পারে, বিশেষত যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাত্রা সম্পন্ন করতে চান।
‘বাংলাশ্রী এক্সপ্রেস’—পরিবহণে নতুন যুগের সূচনা
এই প্রকল্পের মাধ্যমে মমতা সরকার আবারও প্রমাণ করল, সাধারণ মানুষের চাহিদাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে দূরত্ব কমানো ও পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও সুষ্ঠু ও আধুনিক করে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।
রাজ্যবাসীর যাতায়াত আরও মসৃণ ও সময়সাপেক্ষ করতে এই পরিষেবা আগামী দিনে আরও বিস্তৃত হবে বলেই প্রশাসনের তরফে ইঙ্গিত মিলেছে। অনেকে বলছেন, এটা শুধু একটা বাস পরিষেবা নয়—এটা এক নতুন সংযোগ, রাজ্যজুড়ে গড়ে ওঠা ভ্রাতৃত্বের সেতু।
রাজ্যের যেকোনো প্রান্ত থেকে যদি আপনার গন্তব্য হয় কলকাতা, তাহলে এখন আর চিন্তা নয়। ‘বাংলাশ্রী এক্সপ্রেস’ এখন আপনার সহযাত্রী। সুবিধাজনক সময়, সাশ্রয়ী ভাড়া, আরামদায়ক যাত্রা—সবকিছু মিলিয়ে এক কথায় অনবদ্য এই পরিষেবা।
আর দেরি না করে, আজই কাছের বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জেনে নিন সময়সূচি ও ভাড়ার বিস্তারিত।