কানাডার কেবেক শহরে চলছিল G7 সম্মেলন। বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তবে সম্মেলন শেষ হওয়ার আগেই তিনি হঠাৎ ক্যানাডা ছাড়েন। তাঁর এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে অবাক বিশ্ব কূটনীতি মহল। ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আমাকে তাড়াতাড়ি ফিরতে হচ্ছে, কারণ স্পষ্ট।” এই বক্তব্যের সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “অবিলম্বে তেহরান ছাড়ুন।” তাঁর এই বার্তায় তৈরি হয়েছে নতুন ধোঁয়াশা। ঠিক কী কারণে এই সতর্কবার্তা, তা স্পষ্ট না হলেও আন্তর্জাতিক স্তরে বাড়ছে উদ্বেগ।
G7 বৈঠকের মূল আলোচনার বাইরে
এই বছর G7-এর আলোচ্য বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব বাণিজ্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ। ট্রাম্প শুরুতে সব আলোচনাতেই সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু আচমকা তাঁর বেরিয়ে যাওয়া—বিশেষ করে ইরান সংক্রান্ত সতর্কবার্তার পর—সবার মনোযোগ কেড়ে নেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তেহরান সম্পর্কে হঠাৎ এই কড়া বার্তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, কোনও গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য বা সামরিক পরিস্থিতির মোকাবিলার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও হোয়াইট হাউসের তরফে এ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করা হয়নি।
‘তেহরান ছাড়ুন’—একটি বার্তা, বহু জল্পনা
ট্রাম্পের ‘অবিলম্বে তেহরান ছাড়ুন’ বার্তা শুধুমাত্র মার্কিন নাগরিকদের উদ্দেশে? নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনও সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত? প্রশ্ন উঠেছে কূটনৈতিক মহলে। ইরানের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ নতুন নয়। তবে এবার যেন সরাসরি হুমকির সুর। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন দূতাবাসগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর। ইউরোপীয় মিত্ররাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে ট্রাম্পের ভাষা
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ট্রাম্পের কৌশলগত বার্তাপ্রেরণ বহু পুরনো। তিনি অতীতেও নানা আন্তর্জাতিক আলোচনার সময় আচমকা নীতি বদল করেছেন। এবারও হয়তো কোনও চাপ সৃষ্টি বা আলোচনার আগে শক্তি প্রদর্শনের কৌশল হতে পারে এটি। অন্যদিকে, অনেকে বলছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য শুধুই রাজনীতিক নয়—তাতে সত্যিই কোনও হুমকি বা সংঘর্ষের পূর্বাভাস লুকিয়ে রয়েছে।
ট্রাম্পের ফেরা কি যুদ্ধের আগমনী বার্তা?
বর্তমানে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক প্রায় তলানিতে। তার ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সতর্কবার্তা এবং সম্মেলন ত্যাগ নিঃসন্দেহে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। এই ঘটনার রেশ কতটা গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ, তা জানতে হয়তো আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু একটা বিষয় স্পষ্ট—আন্তর্জাতিক রাজনীতি ফের উত্তাল হতে চলেছে, আর তার কেন্দ্রে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।