Health Tips : হাঁটুর ব্যথা আজ আর শুধু বয়স্কদের সমস্যা নয়। অফিসের দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা হোক বা ওবেসিটি, এমনকি তরুণরাও আজ হাঁটুর যন্ত্রণা নিয়ে ভুগছেন। অনেকেই ভাবেন, পুরনো ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু নিয়মিত কিছু সহজ অভ্যাস গড়ে তুললেই মিলতে পারে অবিশ্বাস্য ফল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ৭ দিনের ভিতরে ব্যথা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
ব্যায়ামেই মুক্তির চাবিকাঠি
দিনে অন্তত ১৫-২০ মিনিট হালকা ব্যায়াম, যেমন হাঁটা, সাইক্লিং, বা সাঁতার হাঁটুর পেশিকে মজবুত করে। তাতে জয়েন্টে চাপ কমে। এছাড়া লেগ রেইজ, হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ বা হালকা স্কোয়াট ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে এক্ষেত্রে ভারী ব্যায়াম নয়, নিয়মিত ও ধীরে ধীরে অভ্যেস গড়াই মূল মন্ত্র।
কখন গরম, কখন ঠাণ্ডা সেঁক?
প্রথম ২ দিন হাঁটু ফুলে থাকলে বরফ প্যাড ব্যবহার করুন, এতে ইনফ্লেমেশন কমবে। পরবর্তী সময়ে গরম সেঁকে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে আরাম মিলবে। তবে কোন অবস্থায় কী ব্যবহার করা যাবে, সে ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
ওজন থাকুক নিয়ন্ত্রণে
অতিরিক্ত ওজন হাঁটুর জয়েন্টের সবচেয়ে বড় শত্রু। যত কেজি ওজন বেশি, তত বাড়ে চাপ ও ক্ষয়। ফল— স্থায়ী ব্যথা। তাই সুস্থ খাদ্যাভ্যাস, পরিমিত খাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখুন। হাঁটু আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।
জুতো বদলালেই বদলাবে হাঁটুর অবস্থা
কঠিন বা হিলযুক্ত জুতো হাঁটুতে অতিরিক্ত চাপ দেয়। পরিবর্তে নরম সোল ও কুশনযুক্ত জুতো ব্যবহার করুন। চলাফেরার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা, সিঁড়ি এড়িয়ে লিফট ব্যবহার করাও অত্যন্ত জরুরি। প্রয়োজনে হাঁটুর সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।
খাবারে থাকুক হাঁটুর ‘সার্জন’
ভিটামিন D, ক্যালসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড— এগুলিই হাঁটুর প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ। দুধ, ডিম, ছোট মাছ, বাদাম ও শাকসবজি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শে গ্লুকোসামিন বা কন্ড্রয়েটিন সাপ্লিমেন্টও উপকারী হতে পারে।
উপেক্ষা নয়, সচেতন হোন
হাঁটুর ব্যথা অবহেলা করলে ভবিষ্যতে তা আর্থ্রাইটিস বা স্থায়ী অক্ষমতায় রূপ নিতে পারে। তাই শুরুতেই সাবধান হোন। ব্যথা হলেই ওষুধ নয়—জীবনযাপনেই বদল আনুন। নিয়মিত অভ্যাস ও যত্নই পারে হাঁটুকে দীর্ঘদিন ভালো রাখতে।
হাঁটুর ব্যথা নতুন হোক বা পুরনো— ঠিক উপায়ে যত্ন নিলে সাত দিনের মধ্যেই মিলতে পারে অভাবনীয় স্বস্তি। নিজেকে সুস্থ রাখতে আজ থেকেই শুরু করুন এই ৫টি অভ্যাস। হাঁটুর যত্ন মানেই সুস্থ ভবিষ্যৎ, সাবলীল চলাফেরা আর জীবনের প্রতি নতুন আশ্বাস।