Gold Rate : বছরের মাঝামাঝি এসে ফের সোনার দামে বাড়বাড়ন্ত দেখা গেল ভারতের বাজারে। ১৯ জুন ২০২৫, বুধবার দেশের বিভিন্ন শহরে ২৪ ক্যারাট সোনার দর প্রতি গ্রামে ₹১০,০৯১-এ পৌঁছেছে, যা আগের দিনের তুলনায় ₹৫৪ বেশি। ২২ ক্যারাটের দর হয়েছে ₹৯,২৫০, আর ১৮ ক্যারাটে প্রতি গ্রামের দাম ₹৭,৫৬৯।
টাকার দাম বাড়ছে, কিনা না কিনব?
সাধারণ মানুষের জন্য এমন মূল্যবৃদ্ধি অনেকসময়েই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে যারা বিয়ের মরসুমে গয়না কেনার কথা ভাবছেন বা ধনতেরসের সময় পুজোর জন্য কিছু সোনা তোলার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য এই বৃদ্ধি অস্বস্তিকর। কিন্তু আর্থিক পরামর্শদাতারা বলছেন, সোনায় এখনও বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
সোনা কি আদৌ নিরাপদ বিনিয়োগ?
ভারতের বাজারে সোনা শুধুমাত্র অলংকারের উপাদান নয়, বরং একপ্রকার সুরক্ষিত সম্পদও বটে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক টালমাটালের সময়ে সোনার প্রতি মানুষের ভরসা বাড়ে। এই মুহূর্তে বিশ্ব বাজারেও সোনার চাহিদা বাড়ছে। ফলে ভারতীয় বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে মুদ্রাস্ফীতি যত বাড়ছে, ততই মানুষ ঝুঁকছেন সোনার দিকে। কারণ, সোনা বহুদিন ধরেই “hedge against inflation” অর্থাৎ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে এক কার্যকরী প্রতিরক্ষারূপে কাজ করেছে।
কেন বাড়ছে দাম?
মূল্যবৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ কাজ করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার দুর্বল হওয়া, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির সোনা কেনার হার বৃদ্ধি, এবং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা—এই তিনটি বিষয় এখন সোনার দামে মূল চালিকাশক্তি।
ভারতে বিশেষ করে উৎসবের মরসুম এবং বিয়ের সময়কাল মানেই সোনার চাহিদা বৃদ্ধি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই সময় দাম কিছুটা চড়া থাকে।
ব্যাংকে নয়, সোনা? তরুণদের মনোভাব কী বলছে
একটা সময় ছিল যখন সোনা ছিল শুধুই প্রবীণদের সম্পদ। কিন্তু এখন ছবিটা বদলেছে। আজকের তরুণ প্রজন্মও বুঝতে শিখেছে সোনার মূল্য। অনেকেই মিউচুয়াল ফান্ড বা স্টক মার্কেটের পাশাপাশি গোল্ড ETF বা ডিজিটাল গোল্ডে বিনিয়োগ করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি দু’দিক থেকেই সোনায় বিনিয়োগ করা যেতে পারে। যদিও অতিমূল্যায়িত দামে তড়িঘড়ি বিনিয়োগ করার আগে বাজারের গতিপ্রকৃতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়াই শ্রেয়।
আগামীর বাজার কী বলছে?
২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে প্রবেশ করছে দেশ। বিশ্বজুড়ে আর্থিক অনিশ্চয়তা ও সুদের হারের ওঠানামার মধ্যে ভারতীয় বাজারেও তার আঁচ পড়ছে। অনেকে মনে করছেন, এ বছরের শেষে সোনার দর আরও বাড়তে পারে।
যদিও কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেন না দাম কোথায় থামবে, তবে বাজারের বর্তমান গতি বলছে—সোনায় আগ্রহ কমার সম্ভাবনা কম।
সোনার দাম যতই বাড়ুক, ভারতের সঙ্গে তার যে আবেগগত বন্ধন রয়েছে, তাতে চিড় ধরানো কঠিন। দাম বাড়ায় দুশ্চিন্তা থাকলেও, একই সঙ্গে তা নিশ্চিত করে দেয়—এই হলুদ ধাতু এখনও মূল্যবান। তবে যারা বিনিয়োগ করতে চান, তাঁদের জন্য সঠিক সময় ও মাধ্যম বেছে নেওয়াই হবে চাবিকাঠি।