UK-India : ভারত-ইউকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে উত্তাল আলোচনা চলছেই। এই পরিস্থিতিতে ইন্ডিয়া গ্লোবাল ফোরামে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানালেন, “এই চুক্তিকে ‘গিভঅ্যাওয়ে’ বলা মোটেও ঠিক নয়। ভারতীয়রা এখানে এসে কেবল সুবিধা নেন না, বরং যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মূল্য সংযোজন করেন।”
চুক্তির মধ্যে ‘ব্যালান্স’ চাইছে ভারত
গোয়েল স্পষ্ট করেন, ভারত চায় ব্যালান্সড ও ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য চুক্তি। তাঁর কথায়, “এটা এমন কিছু নয় যা আমরা নতুন সরকারের পরে দাবি করেছি। এই বিষয়টি গত তিন বছর ধরেই আলোচনার টেবিলে রয়েছে। প্রায় দু’বছর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, এই অংশটি (ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত বিষয়) অচ্যুত ও আলোচনাতীত থাকবে।” তিনি যোগ করেন, “একদিকে রয়েছে ১.৪ বিলিয়ন আশাবাদী ভারতীয়র বাজার, অন্যদিকে যুক্তরাজ্য—যাদের জীবনধারা অনেকটাই স্থিত। তাই ভারসাম্য রাখাই যুক্তিযুক্ত।”
ভারতীয় পেশাদারদের গুরুত্ব বাড়ছে
বাণিজ্য চুক্তির মূল ফোকাসের মধ্যে রয়েছে পণ্য রফতানি-বিনিময় ছাড়াও ভারতীয় ছাত্রছাত্রী ও পেশাদারদের জন্য সহজতর ভিসা ব্যবস্থা। গোয়েলের দাবি, ভারতীয়রা ইউকে-তে গিয়ে কেবল কাজ খোঁজেন না, বরং তাঁদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেন। “এটি একতরফা লাভ নয়, এটি পারস্পরিক বিনিময়—ভারতের জন্য যেমন সুযোগ, তেমন ইউকে-র জন্যও।”
রাজনৈতিক চাপ নয়, কৌশলগত সমঝোতা
ইউকে-র কিছু রাজনৈতিক মহলে ভারতীয়দের জন্য সহজতর ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে সমালোচনা উঠেছিল। তাদের বক্তব্য, এতে ‘ব্রিটিশদের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে ভারতীয়রাই।’ এই অভিযোগে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গোয়েল বলেন, “এটি রাজনৈতিক চাপ নয়। বরং দুই দেশের মধ্যে একটি পরিণত কৌশলগত সমঝোতার অংশ। আর এই বিষয়টি দু’বছর আগে থেকেই চুক্তির অঙ্গ হিসেবে গৃহীত।”
আগামী দিকনির্দেশনা
বর্তমানে উভয় দেশ এই চুক্তির শেষ পর্যায়ের আলোচনা চালাচ্ছে। জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনো গিয়েছে, এখন মূল আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ইমিগ্রেশন ও সার্ভিস সেক্টর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি কার্যকর হলে ভারতের স্টার্টআপ, টেক্সটাইল, এবং আইটি শিল্প বড়সড় লাভের মুখ দেখবে। অন্যদিকে ইউকে-ও ভারতের বাজারে আরও প্রবেশাধিকার পাবে।
পীযূষ গোয়েলের বার্তা স্পষ্ট—ভারত কোনো দয়া চাইছে না, বরং সে নিজের পরিশ্রম, দক্ষতা ও বাজারের শক্তি দিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে ন্যায্য জায়গা দাবি করছে। যেখানে ‘গিভঅ্যাওয়ে’ নয়, বরং পারস্পরিক স্বার্থ ও বিশ্বাসই হোক দুই দেশের বাণিজ্যের ভিত্তি—এটাই গোয়েলের মূল বক্তব্য। এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ভারত নিজের অবস্থান নিয়ে এখন আগের থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী—ও সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে।
#WATCH | London, UK | Speaking on the UK-India Free Trade Agreement (FTA) at the India Global Forum, Union Minister Piyush Goyal says, “It is unfair to call it a giveaway. Indian people add value to the UK economy when they come here…”
“This is not something we raised after… pic.twitter.com/vTQBzVbSwK
— ANI (@ANI) June 19, 2025