বেশ কিছুদিন ধরে কানাঘুষো চলছিল। তবে এ বার মুখ খুলল পাকিস্তান নিজেই। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্য অবশেষে স্বীকার করলেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার। তাঁর স্বীকারোক্তিতে স্পষ্ট, মে মাসের গোড়ায় ভারতের পাল্টা হামলা বেশ বড়সড় চাপে ফেলেছিল ইসলামাবাদকে।
পওয়গাঁওয়ে হামলার জবাবেই ‘অপারেশন সিঁদুর’
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পালঘামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় নিহত হন ২৬ জন নিরীহ নাগরিক। সেই ঘটনার পরে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয় ভারত। পরিকল্পনা অনুসারে ৭ মে রাত ১টা নাগাদ শুরু হয় গোপন সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’। চলতি কথায় যার অর্থ—রক্তের বিনিময়ে প্রতিশোধ। এই অভিযানে মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যেই পাকিস্তান ও অধিকৃত কাশ্মীর অঞ্চলের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানে ভারতীয় বিমান ও মিসাইল বাহিনী।
পাকিস্তানের দুই গুরুত্বপূর্ণ এয়ারবেসে হামলা
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার সম্প্রতি স্বীকার করেন, ভারতীয় বাহিনী সরাসরি আঘাত হেনেছে নুর খান এয়ারবেস (রাওয়ালপিন্ডি) ও শোরকোট এয়ারবেস (পাঞ্জাব)-এ। এই এয়ারবেসগুলির সামরিক গুরুত্ব বিপুল, বিশেষ করে অ্যাওয়াক্স (AWACS) বা আকাশ থেকে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থাপনার জন্য। পরবর্তীতে এক প্রাক্তন পাকিস্তানি এয়ার মার্শাল জানিয়েছেন, ভারতীয় হামলায় একাধিক AWACS বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা ছিল পাকিস্তান বায়ুসেনার জন্য বড় ধাক্কা।
আঘাতের পরই আন্তর্জাতিক স্তরে তৎপরতা
ভারতের হামলা এতটাই আচমকা ছিল যে, পাকিস্তানের পরিকল্পিত পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ হয়। হামলার মাত্র ৪৫ মিনিটের মধ্যে সৌদি প্রিন্স ফয়সাল বিন সালমান পাকিস্তানকে ফোন করে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানান। যুক্তরাষ্ট্রও দ্রুত হস্তক্ষেপ করে। এইসব কূটনৈতিক চাপের ফলেই ১০ মে থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে তার আগেই ভারত বুঝিয়ে দিয়েছিল, হামলার জবাব দিতে সে এখন অনেক বেশি প্রস্তুত।
ব্রহ্মোসের নিশানায় রাওয়ালপিন্ডি
পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিজেও পরে জানান, ভারতের ব্রহ্মোস মিসাইল রাওয়ালপিন্ডি বিমানবন্দর ও নুর খান বায়ুসেনা ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হেনেছিল। যেটি পাক সেনার জন্য চূড়ান্ত অপ্রস্তুতির ঘটনা ছিল বলে অনেকে মনে করছেন।
এই সাম্প্রতিক স্বীকারোক্তি শুধু একটি সামরিক অভিযানের সাফল্যের প্রমাণ নয়, বরং কূটনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা দৃষ্টিকোণ থেকেও এক নতুন বার্তা। ভারত এখন শুধু প্রতিক্রিয়াশীল নয়, প্রয়োজনে প্রিভেন্টিভ স্ট্রাইক করতে সক্ষম—এ কথা বুঝিয়ে দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানের মতো রাষ্ট্রের কাছ থেকে এমন খোলামেলা স্বীকারোক্তি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থানকে আরও জোরালো করে।