গাজিয়াবাদ: বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নোরা ফাতেহির (Nora Fatehi) মতো ফিটনেস আর চেহারা পাওয়ার জন্য এক গৃহবধূকে তাঁর স্বামী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, অভিযোগের তালিকায় রয়েছে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর মতো গুরুতর বিষয়ও। গাজিয়াবাদের মুরাদনগর এলাকার ২৬ বছর বয়সি ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ এনেছেন।
নোরা ফাতেহির মতো হওয়ার চাপ
পুলিশ সূত্রে খবর, গত মার্চ মাসে মুরাদনগরের বাসিন্দা ওই তরুণীর সঙ্গে উত্তর প্রদেশের মীরাটের এক শারীরিক শিক্ষা শিক্ষকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাঁর স্বামী তাঁর উপর নোরা ফাতেহির মতো আকর্ষণীয় চেহারা তৈরির জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। অভিযোগ, প্রতিদিন তিন ঘণ্টা জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করতে বাধ্য করা হত এবং খাবারের উপরও কড়া নিয়ন্ত্রণ চাপানো হয়েছিল। এই কঠোর রুটিনের ফলে ওই গৃহবধূর শরীর ক্রমশ দুর্বল হতে শুরু করে।
পণপ্রথা ও অভিযোগের নেপথ্যে
গৃহবধূর পরিবারের দাবি, বিয়ের সময় পণ হিসেবে একটি মাহিন্দ্রা স্করপিও গাড়ি, নগদ টাকা এবং গয়না মিলিয়ে প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আরও পণ চেয়ে নিয়মিত চাপ দিত বলে অভিযোগ। এই চাপের কারণেও ওই গৃহবধূর জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
মর্মান্তিক পরিণতি: জোর করে গর্ভপাত
সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে দু’মাস আগে। ওই গৃহবধূ যখন জানতে পারেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা, তখন নতুন করে সমস্যা শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্বামী তাঁর সম্মতি ছাড়াই তাঁকে গর্ভপাতের ওষুধ খাইয়ে দেন, যার ফলে তাঁর গর্ভপাত হয়ে যায়। এই ঘটনার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে তাঁর বাবার বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয় এবং পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে তিনি যখন শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চান, তখন তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে তিনি বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেন। পুলিশ যৌতুক হয়রানি, ইচ্ছাকৃত অপমান এবং জোর করে গর্ভপাতের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।