শুভক্ষণে মহাপর্ব এই ২০২৫ সালের ২৭ আগস্ট, বুধবার পালিত হবে গণেশ চতুর্থী। এ বছর দিনটির বিশেষ তাৎপর্য জ্যোতিষশাস্ত্রের দিক থেকেও নজর কেড়েছে। বুধবার, অর্থাৎ বুধগ্রহের প্রভাবে পালিত উৎসবটিকে আরও শক্তিশালী বলে ধরা হচ্ছে। বুধ জ্ঞান, যোগাযোগ ও প্রজ্ঞার প্রতীক। ফলে শ্রীগণেশের আরাধনায় নতুন সূচনা ও শিক্ষালাভের সম্ভাবনা এ বছর বিশেষভাবে জোরালো বলে মনে করা হচ্ছে।
রাহু-কেতু প্রভাব ও কর্মফল মোচন
জ্যোতিষবিদরা জানাচ্ছেন, এ বছর রাহু ও কেতুর অবস্থান এই পূজার মাহাত্ম্য আরও বাড়িয়ে তুলবে। রাহু-কেতুকে অতীত ও বর্তমান জীবনের কর্মফলের প্রতীক বলা হয়। তাই বিশ্বাস করা হচ্ছে, গণেশ পূজায় ভগবানের আরাধনা করলে কর্মফলজনিত বাধা কমে গিয়ে জীবনে স্পষ্টতা ও স্থিতি আসবে। হঠাৎ ক্ষতি বা দুর্ভাগ্যের আশঙ্কাও কমতে পারে।
গ্রহগত অবস্থান ও তার তাৎপর্য
এ বছর কয়েকটি বিশেষ যোগ তৈরি হচ্ছে, যা ভক্তদের জীবনে নানা পরীক্ষার ইঙ্গিত দিচ্ছে—
-
সূর্য ও কেতু সিংহ রাশিতে: অহংকার ও ক্ষমতার পরীক্ষা, সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রজ্ঞার ভিত্তিতে।
-
চন্দ্র ও মঙ্গল কন্যা রাশিতে: অস্থিরতা ও উদ্বেগ বাড়তে পারে, গনপতির পূজায় মানসিক শান্তি লাভ সম্ভব।
-
বুধ ও শুক্র কর্কট রাশিতে: পুরনো মানসিক ক্ষত প্রকাশ পেতে পারে, গনেশ আরাধনায় নতুন সূচনার পথ খুলতে পারে।
-
শনি ও নেপচুন মীন রাশিতে (বক্রী): কঠিন সত্যের মুখোমুখি হওয়ার সময়, ভ্রান্তি ভেঙে বাস্তবের সঙ্গে সংযোগ ঘটাবে।
ভক্তদের জন্য উপায় ও করণীয়
এই বিশেষ দিনে শ্রীগণেশের আশীর্বাদ লাভের জন্য প্রচলিত কিছু আচার মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে—
-
বাড়ি ও পূজাস্থল পরিস্কার করে প্রবেশপথ সমুদ্রলবণ মিশ্রিত জলে ধুয়ে নেওয়া।
-
হলুদের গুঁড়ো দিয়ে ছোট গনেশ মূর্তি তৈরি করে পূজা করা।
-
বাস্তু মতে, মূর্তি উত্তর-পূর্ব দিকে স্থাপন করে পূর্ব বা পশ্চিমমুখী রাখা।
-
২১টি দূর্বা ঘাস, মোদক, লাড্ডু ও লাল ফুল নিবেদন করা।
-
মন্ত্র জপের মধ্যে—
-
বাধা দূর করতে: “ওঁ গণ গণপতয়ে নমঃ” (১০৮ বার)।
-
কেতুজনিত সমস্যায়: “ওঁ বিঘ্ন নাশনায় নমঃ”।
-
-
প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করা।
-
ধ্যান ও আত্মবিশ্লেষণের মাধ্যমে অন্তর্দৃষ্টি বাড়ানো।
-
প্রসাদ পরিবার, বন্ধু ও অভাবী মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।
২০২৫-এর গণেশ চতুর্থী শুধু ভক্তির উৎসবই নয়, আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি ও জীবনের জটিলতা কাটানোর এক বিশেষ সময় হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বিরল গ্রহসংযোগের প্রভাবে ভক্তরা যেমন নতুন আশার আলো দেখছেন, তেমনই শ্রীগণেশের পূজার মাধ্যমে মানসিক শান্তি ও ইতিবাচক শক্তির সন্ধান পাবেন বলে বিশ্বাস।