একেবারে নিঃশব্দে, সূক্ষ্ম কৌশলে কাজ সেরে নিল ভারত। বুধবার মধ্যরাতে রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট, অর্থাৎ মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের দফা রফা করল ভারতের সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনা, নৌ সেনা এবং বায়ুসেনার যৌথ অভিযানে ধ্বংস হয়ে গেল পাকিস্তানের নটি সক্রিয় জঙ্গি ঘাঁটি। সেনাবাহিনী সূত্রে খবর, এটি শুধুমাত্র একটি প্রতিশোধ নয়, একটা ক্লিন অপারেশন, যেখানে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার কোন সুযোগ রাখা হয়নি।
তিন দশকের শিকর উপড়ে ফেলল ভারত
ভারতীয় সেনাসুত্র খবর, পাকিস্তানের যে ঘাঁটিগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে সেগুলো অস্তিত্ব নতুন নয়। ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা যায় গত তিন দশক ধরে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে ওইসব জঙ্গি ঘাঁটি। পাকিস্তানি জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ, হামলার পরিকল্পনা, জঙ্গি নিয়োগ ইত্যাদি সবকিছু চলতো ওই ঘাঁটি গুলিতে। ঘাঁটি গুলোকে বলা হয় ‘লঞ্চ প্যাড’। ভারতে হামলার আগে এখান থেকেই জঙ্গিরা পাড়ি দিয়েছিল। আজকের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সেই জঙ্গি ঘাঁটি গোড়া থেকে উপড়ে ফেলেছে।
কোথায় কোথায় চালানো হয় হামলা?
গোয়েন্দা সুত্রে জানা যায়, সেনাবাহিনী অন্তত ২০টিরও বেশি সম্ভাব্য শিবির চিহ্নিত করে। যার মধ্যে প্রথম ধাপে টার্গেট করা হয় ৯টায়, সেগুলো হল- সাওয়াই নালা, সৈয়দ না বিলাল, মসকর-ই-আকসা, চেলাবন্দি, আবদুল্লা বিন মাসুদ, দুলাই, গরহি হাবিবুল্লা, বতরসি, বালাকোট। এছাড়া আরও কিছু সম্ভাব্য ঘাঁটির তালিকাও রয়েছে সেনার নজরে, যথা- ওঘি, বোই, সেনসা, গুলপুর, কোটলি, বরালি, মেহমুনা জোয়া, সরজল, মুরিদকে, বাহওয়ালপুর।
সিভিলিয়ান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন—বিশেষ নজর
এই অভিযানের আর একটা বড় দিক হল সেনার সতর্কতা। সাধারণ মানুষ যেন আঘাত না পান, সেই কারণে টার্গেট নির্ধারণ এবং হামলার সময় নিয়ে বহুদিন ধরে পরিকল্পনা ছালন হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঠিক করা হয়, কখন কোন জায়গায় লোকজন কম থাকে এবং কখন হামলা করলে সবচেয়ে নিখুঁত ফল পাওয়া যাবে। সেই মতই শুরু হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
ভারতের স্পষ্ট বার্তা—যেখানে সন্ত্রাস, সেখানেই আঘাত
এই অভিযান শুধু সামরিক শক্তি প্রদর্শন নয়, এটি ভারতের কূটনৈতিক ও কৌশলগত অবস্থানকে স্পষ্ট করে দিয়েছে। দিল্লির কূটনৈতিক শিবির বলছে, “যেখানে জঙ্গি থাকবে, সেখানেই হামলা হবে। আন্তর্জাতিক সীমানা বা আলোচনার ধোঁয়াশায় আর ভারত নিজেকে আটকে রাখবে না।”