Deepika Padukone : মা হওয়ার পর দীপিকা পাড়ুকোন যেন নিজের কেরিয়ার নিয়ে এক নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন। কাজের ব্যস্ততা আর ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে অভিনেত্রী যেভাবে কিছু ‘শর্ত’ রেখেছেন, তাতেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে নির্মাতারা। প্রথমে পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ‘স্পিরিট’ থেকে বাদ পড়া, আর এখন শোনা যাচ্ছে, সেই একই কারণে অশ্বিনের ‘কল্কি ২’ থেকেও দীপিকার নাম তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
‘স্পিরিট’-এও ছিল বিতর্ক, ‘কল্কি ২’তে ফের সেই ছবি?
বলিউড ডট মোবি নামক একটি ইনস্টাগ্রাম পেজে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছে, দীপিকা তাঁর শুটিং সময় নির্দিষ্ট করতে চেয়েছিলেন। ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না, হিন্দি ছাড়া অন্য কোনও ভাষায় সংলাপ বলবেন না এবং পারিশ্রমিকের পাশাপাশি সিনেমার মুনাফার অংশও চেয়েছেন তিনি।
এই ‘চাহিদা’ পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার পছন্দ হয়নি। তিনি এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ নাম না করেই দীপিকাকে নিশানা করে লেখেন, “আমার উপর বিশ্বাস রাখো, এমন একজন মানুষ হও যে অন্যকে ছোট না করে নিজের অধিকার আদায় করে। এটাকে নারীবাদ বলো না, বরং বলো ‘ডার্টি গেমস’।” এই পোস্টের পর থেকেই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে।
মা দীপিকার অগ্রাধিকার এখন মেয়ে ‘দুয়া’
২০২৪-এর শেষদিকে মা হন দীপিকা পাড়ুকোন। তিনি ও রণবীর কাপুরের কন্যাসন্তানের নাম রাখা হয় ‘দুয়া’। তারপর থেকেই দীপিকা ধীরে ধীরে নিজেকে অভিনয় থেকে একটু দূরে সরিয়ে নিচ্ছেন। সন্তান ও পরিবারের সময় দেওয়াটাকেই জীবনের প্রধান অগ্রাধিকার করছেন। এমনকি বলিউডের একাংশ বলছে, দীপিকা এখন ‘ফিল্ম-ফার্স্ট’ নন, বরং ‘ফ্যামিলি-ফার্স্ট’। এই অবস্থান থেকে তার কাজের প্রতি কিছু যুক্তিযুক্ত শর্ত থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু বলিউডের পুরুষতান্ত্রিক আবহে তা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না।
দীপিকা না থাকলে কী হবে ‘কল্কি ২’–র ভবিষ্যৎ?
‘কল্কি ২’ একটি বহুল আলোচিত প্যান-ইন্ডিয়া প্রজেক্ট। প্রভাস অভিনীত এই সিনেমাটি প্রথম অংশের পর থেকেই দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে। দীপিকার উপস্থিতি থাকলে ছবির গ্ল্যামার ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ত, এমনটাই মনে করছিলেন অনেকেই। কিন্তু এখন যদি তিনি বাদ পড়েন, তাহলে নির্মাতাদের সামনে বিকল্প খোঁজার বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে। যদিও নির্মাতারা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দীপিকার বাদ পড়া নিয়ে মুখ খোলেননি।
দীপিকার অবস্থান: বায়না না, বরং ‘যোগ্য দাবি’
বলিউডের অনেকেই বলছেন, দীপিকা যা করছেন, তা কোনও বায়না নয়— বরং নিজের পারিশ্রমিক ও সময়ের মূল্য বোঝার নিদর্শন। অভিনেত্রী হিসেবে তিনি গত দশকে নিজের প্রতিভা ও পরিশ্রমে বলিউডের প্রথম সারিতে উঠে এসেছেন। তাঁর দাবি একান্তই পেশাদার এবং যুক্তিযুক্ত। তবে ইন্ডাস্ট্রির একাংশের মতে, মাতৃত্বের পর ফেরা নিয়ে যদি খুব বেশি শর্ত থাকে, তাহলে প্রজেক্টের সঙ্গে মানিয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে বিকল্প ভাবাটাও নির্মাতাদের পক্ষে বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে।
‘কন্যা’ না ‘ক্যামেরা’? দীপিকার সামনে দোটানা
দীপিকা পাড়ুকোন এখন এক নতুন জায়গায় দাঁড়িয়ে— যেখানে একদিকে রয়েছে মা হিসেবে তাঁর দায়িত্ব, আর অন্যদিকে রয়েছে কেরিয়ারের মাইলস্টোন। একদিকে বলিউডের চেনা নিয়ম, অন্যদিকে নিজস্ব স্বাধীনতা আর ব্যক্তিত্ব। তিনি ‘কল্কি ২’-তে থাকুন বা না থাকুন, তাঁর এই অবস্থান ভবিষ্যতের বলিউড অভিনেত্রীদের জন্য একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেই।