২০১৬ সালের নোটবন্দির স্মৃতি এখনও অনেকের কাছে টাটকা। তখন আচমকাই বাতিল হয়েছিল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট। তারপর আবার ২০২৩-এ ২০০০ টাকার নোটও ধাপে ধাপে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়। আর এখন—২০২৫ সালের মাঝামাঝি এসে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে এক নতুন আতঙ্ক: ৫০০ টাকার নোট কি এবার নিষিদ্ধ হতে চলেছে?
সবথেকে বেশি প্রচলিত নোট এখন ৫০০
বর্তমানে ভারতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত নোট হল ৫০০ টাকা। হোটেল, বাজার, দোকান, রেস্তোরাঁ, ছোট-বড় লেনদেন—সবখানেই এই নোট অপরিহার্য। এমন একটি নোট যদি বাতিল করা হয়, তবে তার প্রভাব ব্যাপক হতে পারে—এমনটাই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
সরকার ও RBI এখনও নীরব
সরকার বা রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা আসেনি। তবে, সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, ৫০০ টাকার নোটের ব্যাপক অপব্যবহার, কালো টাকার লেনদেন এবং দুর্নীতির আশঙ্কা থেকেই বিষয়টি নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, “নোটের অতিরিক্ত প্রচলনই একাধিক আর্থিক অপরাধের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে নোটের সংখ্যা কমিয়ে ক্যাশলেস ইকোনমি গড়ে তোলাই সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য।”
যদি বাতিল হয়, কী হবে প্রভাব?
৫০০ টাকার নোট যদি সত্যিই বাতিল হয়, তাহলে তার প্রভাব বহুমুখী হবে:
ছোট ব্যবসায়ীদের উপর চাপ: যাঁরা মূলত নগদ লেনদেনে অভ্যস্ত, তাঁদের পক্ষে বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
ব্যাংকবহির্ভূত জনগোষ্ঠীর সমস্যা: এখনও বহু মানুষ ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরে রয়েছেন। তাঁদের কাছে নগদই ভরসা।
সাময়িক আর্থিক বিশৃঙ্খলা: সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক তৈরি হতে পারে।
ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঠেলা: সরকারের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য—ডিজিটাল ইন্ডিয়া—আরও একধাপ এগোতে পারে।
বিকল্প কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ৫০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে তা ধাপে ধাপে হবে। ১০০, ২০০ এবং ২০ টাকার নোটের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। এছাড়াও, UPI, NEFT, এবং অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেনকে আরও উৎসাহ দেওয়া হবে।
প্রশ্নোত্তরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
১. ৫০০ টাকার নোট কি আজকেই নিষিদ্ধ হচ্ছে?
না, এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা আসেনি। সবটাই জল্পনা।
২. কালো টাকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবেই কি এটা ভাবা হচ্ছে?
হ্যাঁ, মূলত আর্থিক স্বচ্ছতা ও দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যেই এমন সম্ভাবনার কথা ভাবা হচ্ছে।
৩. সাধারণ মানুষ কীভাবে তৈরি থাকবে?
নগদ নির্ভরতা কমানো, ডিজিটাল মাধ্যম শেখা ও ব্যবহার করা—এটাই এখন সময়ের দাবি।
৪. RBI-র ভূমিকা কী?
নোট বাতিল বা ছাপার সিদ্ধান্ত সরাসরি RBI-র অনুমোদন ছাড়া সম্ভব নয়। তাই তাঁদের মতামত ও অনুমোদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, ৫০০ টাকার নোট বাতিলের বিষয়টি আপাতত জল্পনা হলেও, সরকারের অতীত সিদ্ধান্তের অভিজ্ঞতা বলছে—যখন কিছু ঘটে, তা হঠাৎ করেই ঘটে। তাই ভবিষ্যতের জন্য তৈরি থাকা জরুরি। সরকার চুপ থাকলেও দেশের আর্থিক ভবিষ্যৎ যে বড়সড় পরিবর্তনের মুখে, তাতে সন্দেহ নেই।

