আচমকা ভ্রমণের পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হতে হচ্ছে বহু যাত্রীকে। কারণ, এয়ার ইন্ডিয়া তাদের একাধিক আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট স্থগিত ও উড়ান সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত বিমান নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত কারণে এই পদক্ষেপ বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
৩৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল, বন্ধ ৩টি রুট
সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২১ জুন থেকে ১৫ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত সাপ্তাহিক ৩৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে বাতিল করা হবে। পাশাপাশি, সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক রুট—
-
দিল্লি-নাইরোবি (সপ্তাহে ৪ বার),
-
অমৃতসর-লন্ডন গ্যাটউইক (সপ্তাহে ৩ বার),
-
গোয়া-মোপা-লন্ডন গ্যাটউইক (সপ্তাহে ৩ বার)।
দুর্ঘটনার পর বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ১২ জুনে ঘটে যাওয়া একটি Boeing 787 বিমানের দুর্ঘটনা। সেই ঘটনার পরই এয়ার ইন্ডিয়া তাদের সম্পূর্ণ widebody বিমান বহর-এর উপর কঠোর প্রি-ফ্লাইট সেফটি ইনস্পেকশন শুরু করে। এর প্রভাবেই ছাঁটাই করা হয়েছে ফ্লাইট সংখ্যা। প্রাথমিকভাবে এয়ার ইন্ডিয়ার ৮৩টি widebody ফ্লাইট ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত ৩৩টির মধ্যে ২৬টি Boeing 787 বিমান পরিদর্শনের পর উড়ান চালাতে অনুমতি পেয়েছে। পাশাপাশি, Boeing 777 বিমানগুলিরও বিশেষ পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে।
মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের আকাশসীমা নিয়েও সমস্যা
শুধু দুর্ঘটনাজনিত নিরাপত্তা ইস্যুই নয়, চলমান মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের আকাশসীমা সংকট-ও এয়ার ইন্ডিয়ার রুট পরিকল্পনায় বড় প্রভাব ফেলছে। যুদ্ধ ও নিরাপত্তাজনিত কারণে বেশ কিছু এয়ারস্পেস বন্ধ থাকায় ফ্লাইট রি-রাউট করতে হচ্ছে, যা অপারেশনাল ব্যয় বাড়াচ্ছে ও সময়ও নিচ্ছে বেশি।
যাত্রীদের জন্য বিশেষ সহায়তা
যাঁরা ইতিমধ্যে টিকিট কেটে ফেলেছেন বা যাত্রার পরিকল্পনা করেছেন, তাঁদের জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে পূর্ণ রিফান্ড, কমপ্লিমেন্টারি রিসিডিউলিং, অথবা বিকল্প ফ্লাইটে রি-বুকিং করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সংস্থার দাবি, যাত্রীদের অসুবিধা যতটা সম্ভব কমানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।
নিরাপত্তার সঙ্গে আপস নয়
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, “আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিই। তাই সাময়িক অসুবিধা হলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি আরও নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য পরিষেবা গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”