India-Bangladesh : বাংলাদেশের সংরক্ষণ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় মুখ নিউটন দাসের একটি ছবি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয় যখন জানা যায়, এই নিউটন দাস এখন ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে বাস করছেন এবং ভারতের বৈধ ভোটার হিসেবেও নাম নথিভুক্ত।
তাঁর দাদা তপন দাস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,“নিউটন বাংলাদেশে জন্মালেও বহু বছর ধরেই কাকদ্বীপে থাকছে। এখানকার স্কুলেই পড়াশোনা করেছে। ভোটার তালিকাতেও নাম উঠেছে।” তবে প্রশ্ন উঠছে—বাংলাদেশের নাগরিক কীভাবে ভারতীয় ভোটার হতে পারেন?
কাকদ্বীপে ঘর, কিন্তু ভোটার কার্ড দুই দেশের?
নিউটনের দাবি অনুযায়ী, তিনি ২০১৪ সাল থেকেই ভারতের ভোটার। যদিও তাঁর ভোটার কার্ড হারিয়ে যাওয়ার পর ২০১৮ সালে আবার একটি নতুন কার্ড পান। এর সঙ্গেই তিনি দাবি করেছেন, ২০২৪ সালে পারিবারিক কারণে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, যেখানে ছাত্র আন্দোলনের সময়ে তাঁর কিছু ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে। কিন্তু তাঁর পরিবার বা বাবা-মা কেউই ভারতীয় ভোটার নন। সেক্ষেত্রে নিউটনের নাম ভোটার তালিকায় কীভাবে উঠল?
বন্ধুত্ব না রাজনৈতিক যোগাযোগ?
ভাইরাল হওয়া একটি ফেসবুক ছবিতে দেখা গিয়েছে, নিউটন দাস কেক কাটছেন স্থানীয় টিএমসিপি নেতা দেবাশিস দাসের সঙ্গে। এই ছবি ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। দেবাশিস দাবি করেছেন, “নিউটন আমার স্কুলজীবনের বন্ধু। ২০২১-২২ সালে হঠাৎ করে দেখা হয়। জন্মদিনে একসঙ্গে কেক কাটায় কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—কীভাবে একজন বাংলাদেশি আন্দোলনের মুখ ভারতের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে এত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন?
নিউটনের ভিডিও বার্তা
নিউটন নিজের একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “আমি বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা নই। পূর্বপুরুষদের সম্পত্তির কারণে বাংলাদেশ গিয়েছিলাম। যেসব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেগুলি বিভ্রান্তিকর ও গুজব। আমি কাকদ্বীপের বৈধ ভোটার।”এই ভিডিও আরও সন্দেহ তৈরি করেছে, কারণ তিনি নিজেই স্বীকার করছেন যে বাংলাদেশে গিয়ে বিপ্লবী পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
দুটি দেশ, একটি ভোটার?
ভারতের আইন অনুযায়ী, যে কেউ অন্য দেশের নাগরিক হলে তিনি ভারতের ভোটার হতে পারেন না। কিন্তু নিউটনের ক্ষেত্রে যে তথ্য সামনে আসছে, তাতে দ্বৈত ভোটার পরিচয় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই কেলেঙ্কারিতে এখন প্রশাসনের তরফে কোনও তদন্ত শুরু হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই চাপে রয়েছে শাসক দল ও স্থানীয় প্রশাসন।
নিউটন দাস একজন সাধারণ ব্যক্তি নন। বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের মুখ হয়ে ভারতীয় রাজনৈতিক আবহে ঢুকে পড়া তাঁর মতো একজন ব্যক্তির ভোটার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা খুবই স্বাভাবিক। প্রশাসনের উচিত এই ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা, যাতে ভবিষ্যতে এমন ‘ডুয়াল ভোটার’ কেলেঙ্কারি আর না ঘটে।