“ভারতের নতুন যাত্রাপথে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নেবে বিহার”—শুক্রবার সিওয়ানে দাঁড়িয়ে এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একদিকে তিনি যেমন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখালেন, তেমনই বিহারে পূর্বতন সরকারগুলির শাসনকেও নিশানা করলেন। জঙ্গলরাজের পুরনো ছবি টেনে এনে কংগ্রেস ও আরজেডিকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি।
উন্নয়নের নতুন রূপরেখা, নেতৃত্বে বিহার?
চলতি লোকসভা নির্বাচনের আবহে বিহারের সিওয়ান জেলার সভামঞ্চ থেকে মোদী জানিয়ে দিলেন, আগামী দিনে বিহারই হতে চলেছে ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের মুখ্য শক্তি। তাঁর দাবি, বিহারের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বের পাশাপাশি এ রাজ্যের যুব সমাজ, পরিশ্রম ও সাহস দেশের অগ্রগতির শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, “বিহার আজ আর পিছিয়ে নেই। ২০৪৭ সালের নতুন ভারতের রূপরেখা তৈরিতে বিহারকে এগিয়ে রাখতে হবে। সুশাসন, পরিকাঠামো ও প্রযুক্তিনির্ভর উন্নয়নে এই রাজ্য বড় ভূমিকা নেবে।”
‘জঙ্গলরাজ’-এর স্মৃতি তুলে আক্রমণ বিরোধীদের
উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে আনলেও মোদী রাজনৈতিক তীর ছুঁড়তে ভোলেননি। কংগ্রেস ও আরজেডির যৌথ শাসনকে বিহারের ‘কালো অতীত’ বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি। তাঁর কথায়, “জঙ্গলে বাঘ থাকে, কিন্তু বিহারে জঙ্গলরাজ চলেছিল মানুষ খেয়ে নেওয়ার মতো।” এমন মন্তব্য করে সভায় হাসির রোল তুললেও, বিষয়টি যে গভীর রাজনৈতিক বার্তা বহন করে, তা স্পষ্ট। তিনি অভিযোগ করেন, আরজেডি-কংগ্রেস জমানায় বিহারে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, দুর্নীতি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল চরমে। আজকের ভারত নতুন নেতৃত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির দিকেই তাকিয়ে আছে বলে জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও বিহারকে ঘিরে প্রতিশ্রুতি
সভায় মোদী আরও বলেন, বিহারকে ঘিরে বেশ কিছু কেন্দ্রীয় পরিকাঠামো ও সংযোগ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার সুফল আগামী দিনে দৃশ্যমান হবে। নতুন রেললাইন, এক্সপ্রেসওয়ে, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা—সব কিছুতেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই রাজ্যকে। সাধারণ মানুষের জন্য কেন্দ্র যে একাধিক সামাজিক প্রকল্প চালু করেছে, তাও সভায় তুলে ধরেন তিনি। যেমন: আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা গ্যাস, বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্যবীমা ইত্যাদি।
রাজনীতির ময়দানে বার্তা
বিহারে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটকে আরও শক্তিশালী করতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই ভাষণ ছিল স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের টার্গেট করেই বারবার তুলে ধরা হয়েছে উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও ‘নতুন ভারত’-এর স্বপ্ন। তিনি জানান, বিহারের যুবকদের প্রাপ্য সম্মান ও সুযোগ দিতে হলে প্রয়োজন স্থিতিশীল, সুশাসনের সরকার।