এক চরম আতঙ্কজনক মুহূর্তের সাক্ষী রইল উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি। ভোররাতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ল পর্যটকদের একটি বোলেরো গাড়ি। গাড়িতে থাকা সাতজন পর্যটক গুরুতর আহত হন। সকলেই পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে আহতরা জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভোররাতে ট্রেন ধরতে বেরিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
শুক্রবার ভোর তিনটে নাগাদ এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সূত্রের খবর, ডুয়ার্সের বাতাবাড়ি এলাকা থেকে পর্যটকদের একটি বোলেরো গাড়ি রওনা দেয় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দিকে। উদ্দেশ্য ছিল সময়মতো ট্রেন ধরা। তবে সেই যাত্রা মাঝপথেই থেমে যায় মৌলানি ওভারব্রিজের কাছে, যেখানে গাড়িটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ওপর উল্টে যায়।
গাড়ির গতি খুব একটা বেশি ছিল না, তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, হঠাৎই গাড়িটি বাঁ দিকে হেলে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যেই উল্টে যায়। চালক কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু ঘটে যায়। ফলে গাড়িতে থাকা সকল পর্যটক মারাত্মকভাবে জখম হন।
দুর্ঘটনার পরে চাঞ্চল্য, ছুটে এলেন স্থানীয় বাসিন্দারা
দুর্ঘটনার শব্দ শুনে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা ও পথচারীরা। গাড়ির মধ্যে আটকে পড়া আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন তাঁরা। সেই সময় রাস্তায় টহলদারি করছিলেন ক্রান্তি ট্রাফিক থানার ওসি। তিনি নিজেও দ্রুত উদ্ধার কাজে হাত লাগান।
এরপর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ বাহিনী। ওসি ফারুক আলম ও থানার ওসি কেটি লেপচা তাঁদের নিজস্ব পুলিশ ভ্যানে করেই আহতদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বলে জানা গিয়েছে।
চিকিৎসাধীন পর্যটকরা, তদন্তে নেমেছে পুলিশ
বর্তমানে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত সাতজন পর্যটক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে কয়েকজনের মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত রয়েছে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তার পেছনে চালকের কোনও শারীরিক অসুস্থতা ছিল কি না, রাস্তার পরিস্থিতি কেমন ছিল, গাড়ির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না—সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পর্যটন মৌসুমে বারবার দুর্ঘটনা, উদ্বিগ্ন প্রশাসন
ডুয়ার্স অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপলক্ষে বহু পর্যটক ভিড় করছেন। কিন্তু বিগত কয়েকদিনে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটায় উদ্বেগ বাড়ছে প্রশাসনের মধ্যে। নিরাপত্তার দিকটি আরও জোরদার করার বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।