ভারতে অনলাইন বেটিং অ্যাপের বিরুদ্ধে চলছে কেন্দ্রীয় সংস্থার কড়া অভিযান। সেই অভিযানেই এবার জড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট জগতের দুই তারকা নাম—হরভজন সিং ও যুবরাজ সিং। অভিযোগ, তাঁরা একটি অবৈধ বেটিং অ্যাপের হয়ে বিজ্ঞাপন করেছিলেন, যা ভারতীয় আইনের পরিপন্থী। এই অ্যাপটি মূলত জুয়া খেলা এবং স্পোর্টস বেটিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হত। ভারতে এই ধরনের কার্যকলাপ বেআইনি হওয়ায়, যাঁরা এ ধরনের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদেরও আইনি জবাবদিহি করতে হচ্ছে।
ইডির নজরে হরভজন ও যুবরাজ
ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে হরভজন সিং এবং যুবরাজ সিংকে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের হয়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল। পরবর্তীতে জানা যায়, ওই প্ল্যাটফর্মটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অবৈধ বেটিং নেটওয়ার্ক। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়। জানা গেছে, দু’জনেই জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁরা জানতেন না এই অ্যাপটি বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।
তারকাদের বিজ্ঞাপনে প্রশ্ন
বেশ কিছুদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে, বলিউড থেকে ক্রিকেট—সব ক্ষেত্রেই তারকারা অবৈধ বা বিতর্কিত অ্যাপের হয়ে প্রচারে নামছেন। তাতে তাঁদের দায় কতখানি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বহুবার। তবে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবার এই ধরনের প্রচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বোঝাতে চাইছে, শুধুমাত্র ‘অজান্তে’ বিজ্ঞাপন করলেই দায় এড়ানো যাবে না। বিজ্ঞাপনের আগে বিষয়টি যাচাই করা তাঁদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
এই প্রথম নয়
এটাই প্রথম নয়, এর আগেও বহু তারকার নাম উঠে এসেছে এই ধরনের বেটিং অ্যাপ বা জুয়ার ওয়েবসাইটের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য। কিছু ক্ষেত্রে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন, আবার কিছুজনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও হয়েছে। কিন্তু যখন জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকারা এমন বিতর্কে জড়ান, তখন তা নিয়ে জনমনে কৌতূহলের পাশাপাশি ক্ষোভও জন্ম নেয়। ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ স্পষ্টই বলছেন, “অর্থের লোভে কীভাবে এইসব কিংবদন্তিরা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, বুঝতে পারছি না!”
তদন্ত কোন দিকে এগোচ্ছে?
ইডি-র তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দিয়েই তাঁদের ভূমিকা শেষ হয়েছে, না কি তাঁরা বেটিং সংস্থার সঙ্গে কোনও আর্থিক অংশীদারিত্বে ছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোনও রকম লেনদেনের প্রমাণ মেলে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, যদি প্রমাণ মেলে যে তাঁরা নির্দোষ, তাহলে তাঁদের ক্লিনচিট দেওয়াও সম্ভব।
এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তোলে—তারকাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কতখানি? শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা নয়, এই জায়গাগুলোতে তাঁদের বিবেক, সচেতনতা ও সততার পরীক্ষা হয়। এখন দেখার, হরভজন-যুবরাজ তাঁদের জায়গা কতটা রক্ষা করতে পারেন।