G7 : আসন্ন G7 শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চে এবার দেখা যেতে পারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তবে এই আমন্ত্রণ এসেছে একেবারে চমকে দেওয়ার মতো এক সূত্র থেকে—নতুন ক্যানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। সম্প্রতি এক ফোনালাপে মোদীকে G7-এ উপস্থিত থাকার জন্য ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেন কার্নি। বিষয়টি নিজেই জানিয়েছেন মোদী, তাঁর সরকারি X (পূর্বতন টুইটার) অ্যাকাউন্টে।
সম্পর্কে বরফ গলছে?
গত কয়েক বছর ধরে ভারত ও কানাডার কূটনৈতিক সম্পর্ক একাধিক বিতর্ক ও উত্তেজনায় জর্জরিত। বিশেষত খালিস্তান ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস প্রবল হয়ে উঠেছিল। এই প্রেক্ষিতে কার্নির মোদীকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো নিঃসন্দেহে একটি পলিসি শিফট বা কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
কার্নির কৌশল? জোটে ভারতের সক্রিয়তা চায় কানাডা
মার্ক কার্নি, যিনি মাত্র কয়েক মাস আগেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক মহলে সক্রিয়। তিনি আইএমএফ ও ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘ সময়। জানা গিয়েছে, তিনি G7-এ ভারতের মতো উদীয়মান শক্তির উপস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। সেই কারণেই মোদীকে সম্মেলনের একটি স্পেশাল ইনভাইটি হিসেবেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
G7 সম্মেলনে ভারতের প্রভাব বাড়ছে
গত কয়েক বছর ধরেই G7-এ ভারতের উপস্থিতি বাড়ছে। যদিও ভারত G7-এর সদস্য নয়, তবুও আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ভারতের অবস্থান ও ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব এতটাই বেড়েছে যে, প্রায় প্রতি বছরই সম্মেলনে ভারতকে আমন্ত্রিত করা হচ্ছে। এই বছর সম্মেলন বসতে চলেছে ইতালিতে, ১৩ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত।
ফোনালাপে কী কী আলোচনা?
সূত্রের খবর, ফোনে মোদী ও কার্নির মধ্যে শুধু G7-ই নয়, ভারত-কানাডা সম্পর্কের ভবিষ্যৎ, বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়। মোদী এক্সে লেখেন, “নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির ফোন পেয়ে আনন্দিত। G7 সম্মেলনের আমন্ত্রণ ও পারস্পরিক আলোচনার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। আমি সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছি।”
পুরনো ক্ষত মুছে এগোনোর বার্তা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফোনালাপ ও আমন্ত্রণ শুধু একটি সম্মেলনে উপস্থিতির ডাক নয়। বরং, এটি একটি “রিসেট সিগন্যাল”—দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক করার এক বড় পদক্ষেপ। একজন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বলেন, “কার্নি নিজে একজন অর্থনীতিবিদ এবং কূটনৈতিকভাবে পরিণত। মোদীকে ফোন করে যে বার্তা দিলেন, তা কেবল আমন্ত্রণ নয়, বরং এটা ভবিষ্যতের দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিপ্রস্তর।”
মোদী যাবেন তো?
এখনও পর্যন্ত মোদীর দফতর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর সম্মেলনে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়নি। তবে তাঁর পোস্টে যে উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে, তাতে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা যথেষ্ট বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের পরবর্তী G20 সভাপতিত্ব ও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব বাড়ার প্রেক্ষিতে, মোদীর এই সফর কূটনীতিতে নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।
রাজনীতি কখনও সরল রেখায় চলে না। কানাডা-ভারত সম্পর্কের অতীত যতই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ হোক না কেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে একে অপরকে পাশে পেলে দুই দেশেরই লাভ। এই ফোনালাপ সেই আশার রঙ ছড়াচ্ছে। এখন অপেক্ষা, মোদী সম্মেলনে যোগ দেন কি না, আর নতুন প্রধানমন্ত্রী কার্নির হাত ধরে ভারত-কানাডা সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়।
Glad to receive a call from Prime Minister @MarkJCarney of Canada. Congratulated him on his recent election victory and thanked him for the invitation to the G7 Summit in Kananaskis later this month. As vibrant democracies bound by deep people-to-people ties, India and Canada…
— Narendra Modi (@narendramodi) June 6, 2025