Honeymoon Murder : ইন্দোরের রাজা রঘুবংশী আর সোনম রঘুবংশী—দু’জনেই সদ্য বিবাহিত। ১৯ মে বিয়ে, তার পরের দিনই মেঘালয়ের পাহাড়ে হানিমুনে পাড়ি। ২৩ মে সোহরার একটি হোমস্টেতে শেষবার তাঁদের দেখা গিয়েছিল একসঙ্গে। ১১ দিন কেটে গেল—শেষ পর্যন্ত খাদ থেকে উদ্ধার হল রক্তমাখা দেহ! কিন্তু সঙ্গী স্ত্রী সোনম কোথায়?
অদৃশ্য সোনম, সন্দেহের কেন্দ্রে
রাজা হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই স্ত্রী সোনম নিখোঁজ। প্রথমে ধরে নেওয়া হয়েছিল তিনিও অপহৃত। অনেকে আবার সন্দেহ করছিলেন, তাঁকে বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। কারণ, সীমান্ত খুব একটা দূরে নয়। মেঘালয় পুলিশ বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনও ফল মেলেনি।
মোড় ঘোরাল আত্মসমর্পণ
১৬ দিন পর নাটকীয় মোড়। উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের নন্দগঞ্জ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন সোনম। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ জানাল, এই মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে—একজন উত্তরপ্রদেশে, দু’জন ইন্দোরে। মেঘালয়ের ডিজিপি আই নোংরাং নিজে এই তথ্য সংবাদমাধ্যমে জানান।
‘ভুল’ যে খুনের ফাঁদ খুলে দিল
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনমের মোবাইল লোকেশন, একটি ফোন কলের সময়-ডেটা ও হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই পুরো ষড়যন্ত্রের জাল স্পষ্ট হতে শুরু করে। ওই হোমস্টের ক্যামেরায় ২৩ মে দুপুরে কিছু সন্দেহজনক দৃশ্য ধরা পড়ে। রাজার দেহ যেভাবে খাদে ফেলা হয়েছিল, তাতে পুলিশের সন্দেহ হয়—এটা দুর্ঘটনা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত খুন।
প্রেম না পরকীয়া?
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সোনমের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল অন্য এক যুবকের। সেই ব্যক্তিও ধৃতদের মধ্যে রয়েছে। পুলিশের অনুমান, এই সম্পর্ক থেকেই রাজার ওপর রাগ জন্মায় এবং পরিকল্পনা হয় তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার। তবে পরকীয়ার বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন।
পরবর্তী তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ
পুলিশ এখন চেষ্টা করছে এই হত্যার নেপথ্যে অর্থনৈতিক বা পারিবারিক কোনও মোটিভ ছিল কি না। অভিযুক্তদের জেরা করে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আদালতে তুলে ধরা হবে ডিজিটাল প্রমাণ, কল রেকর্ড, এবং হোটেল বুকিংয়ের বিস্তারিত।
উল্লেখ্য, এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, সম্পর্কের আড়ালেও থাকতে পারে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। প্রেমের মোড়কে হানিমুন, কিন্তু ফল খুন! আর একটিমাত্র ‘ভুল’ আচরণ—যা গোটা ষড়যন্ত্রের পর্দাফাঁস করল। সোনমের আত্মসমর্পণ না ঘটলে হয়তো রাজার মৃত্যু আজও অজানাই থেকে যেত।
এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তদন্তের পরবর্তী ধাপে আর কী উঠে আসে, সেদিকেই নজর সবার।