Voter Card : সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পাহালগামে জঙ্গি হামলার পর বদলে গেল নাগরিকত্ব প্রমাণের নীতি। দিল্লি পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্তা জানান, এখন থেকে আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা রেশন কার্ড দিয়ে আর কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না যে তিনি ভারতের নাগরিক। শুধু মাত্র ভোটার কার্ড বা বৈধ ভারতীয় পাসপোর্টই এই প্রমাণে বৈধ।
কেন এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত?— বিদেশিদের ভুয়ো নাগরিকত্ব চক্রান্ত ফাঁস
গত অক্টোবর থেকে চালু হওয়া বিশেষ যাচাই অভিযানে উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য। দেখা যায়, বহু বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী নকল বা ভুয়ো আধার, প্যান ও রেশন কার্ড ব্যবহার করে দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলে বসবাস করছেন। অনেকেই এই কার্ডগুলির মাধ্যমে চাকরি, শিক্ষা ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছিলেন।
আধার কি নাগরিকত্ব প্রমাণ করে?— UIDAI-এর পরিষ্কার বার্তা
আধার কার্ড শুধুমাত্র কারও পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে, নাগরিকত্ব নয়। UIDAI (ভারতীয় ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি) জানিয়েছে, আধার কখনওই ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। একই ভাবে প্যান কার্ড হল ট্যাক্স সংক্রান্ত পরিচয়পত্র ও রেশন কার্ড খাদ্য বিতরণ প্রকল্পে ব্যবহৃত, নাগরিকত্বের নয়।
জন্ম শংসাপত্র ও ভোটার আইডিই এখন ভরসা— নিবন্ধন আইনে স্পষ্ট নির্দেশ
১৯৬৯ সালের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইনে বলা হয়েছে, ভারতের মাটিতে জন্ম হলে সরকার স্বীকৃত কর্তৃপক্ষ জন্ম শংসাপত্র দিতে পারে, যা নাগরিকত্ব প্রমাণের বৈধ দলিল। এর পাশাপাশি বৈধ ভোটার কার্ড ও ভারতীয় পাসপোর্টও থাকবে বৈধ নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে।
পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল— জঙ্গি হামলার পর নতুন নির্দেশিকা
পাহালগামের ঘটনার পর কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া ভিসা বাতিল করা হবে। শুধুমাত্র মেডিক্যাল, ডিপ্লোম্যাটিক বা লং-টার্ম ভিসাধারীরাই আপাতত এই সিদ্ধান্তের বাইরে থাকছেন। যদিও ২৯ এপ্রিলের পর মেডিক্যাল ভিসাও অকার্যকর হয়ে যাবে।
দিল্লিতে শুরু পাকিস্তানি নাগরিক চিহ্নিতকরণ অভিযান— তীব্র নজরদারি ও পদক্ষেপ
গোয়েন্দা সংস্থা ও দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাজধানীতে বসবাসরত সব পাকিস্তানি নাগরিককে চিহ্নিত করে দ্রুত দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হোক। তবে হিন্দু পাকিস্তানি নাগরিক যারা আগে থেকেই লং-টার্ম ভিসায় রয়েছেন, তাঁদের এই নিয়মে ছাড় দেওয়া হবে।
জনমত বিভক্ত: প্রশংসা নাকি আতঙ্ক?— নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
এই সিদ্ধান্তকে কেউ স্বাগত জানালেও, কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন—এতদিন পর কেন এই কড়াকড়ি? অনেকের মতে, এতে প্রকৃত ভারতীয়দের হয়রানি হতে পারে, বিশেষত যাঁদের কাছে পাসপোর্ট বা ভোটার কার্ড নেই, কিন্তু জন্মসূত্রে ভারতীয়। অন্যদিকে কেন্দ্রের যুক্তি—নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।
নতুন ভারতের পথে আরও এক পদক্ষেপ?
এই সিদ্ধান্ত হয়তো বিতর্কের জন্ম দেবে, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের এই কড়া পদক্ষেপ আগামী দিনে দেশব্যাপী নাগরিকত্ব যাচাইয়ে নজির হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই নিয়ম ভবিষ্যতে কীভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং সাধারণ মানুষের উপর তার কী প্রভাব পড়ে।