Mystery Death : মধুচন্দ্রিমা… নতুন জীবনের এক সুন্দর সূচনা। অথচ সেই সুখের সফরই রূপ নিল বিভীষিকায়। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে আসা রাজা রঘুবংশী ও তাঁর নববিবাহিতা স্ত্রী সোনম রঘুবংশী মেঘালয়ের সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১১ দিন পর চেরাপুঞ্জির গভীর গিরিখাদ থেকে উদ্ধার হল রাজার দেহ। এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি সোনমকে।
নিখোঁজ হন ২৩ মে, খোঁজ মেলে ২ জুনে
রাজা ও সোনম ২৩ মে পর্যটনকেন্দ্র চেরাপুঞ্জির সোহরায় গিয়েছিলেন স্কুটি করে। সেখান থেকে আর ফেরেননি। ২৪ মে তাঁদের স্কুটি পাওয়া যায় সোহরারিম এলাকা থেকে। এরপর ২ জুন, ড্রোন ব্যবহার করে একটি দুর্গম গিরিখাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার মৃতদেহ। সঙ্গে মেলে মহিলাদের সাদা শার্ট, গ্যাসের ওষুধের পাতা, একটি স্মার্টওয়াচ, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের টুকরো ও একটি ধারাল দা। কিন্তু সোনমের কোনও চিহ্নই এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
অপহরণ না খুন? উঠছে একের পর এক প্রশ্ন
রাজার ভাই শচিন রঘুবংশী দাবি করেছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং স্পষ্ট অপহরণ এবং খুন। তিনি বলেন, “যেখানে স্কুটি পড়েছিল, তার থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে দেহ মিলেছে। এটা কীভাবে সম্ভব?” তাঁর অভিযোগ, স্কুটি ভাড়া দেওয়ার সংস্থা ও হোমস্টে-র লোকজন এতে জড়িত থাকতে পারে। তিনি সেনা নামিয়ে তল্লাশির দাবিও জানিয়েছেন, এবং চেয়েছেন CBI তদন্ত। স্থানীয় পুলিশের গাফিলতির অভিযোগও তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা।
পুলিশের তদন্তে কতদূর?
মেঘালয় পুলিশ ইতিমধ্যে SIT গঠন করে তদন্তে নেমেছে। তল্লাশিতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সমস্ত সম্ভাবনার দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনও সোনমের কোনও খোঁজ নেই।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। মেঘালয়ের পরিবহণ মন্ত্রী পল লিংডো জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা তাঁদের অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, “এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যেমন কেউ থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হলে সেটাকে তো থাইল্যান্ডকে অজ্ঞান পর্যটকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলা যায় না।”
পরিবারের বক্তব্য
রাজার অন্য ভাই বিপিন বলেন, “আমাদের পরিবারের উপর দুর্যোগ নেমে এসেছে। আমরা চাই, যেন সত্য উদঘাটিত হয়। আমাদের বৌদির কী হল, আমরা জানতেও পারছি না। সময় গড়াচ্ছে, কিন্তু কোনও উত্তর নেই।”
উল্লেখ্য, এই রহস্যময় ঘটনায় একদিকে যেমন উঠছে পর্যটক নিরাপত্তার প্রশ্ন, তেমনই স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। এখন দেখার, তদন্ত কতদূর এগোয় এবং সোনম আদৌ জীবিত কি না, তার কোনও চিহ্ন মেলে কিনা। সুখের মুহূর্তগুলো কত দ্রুত ভয়ঙ্কর বাস্তবে রূপ নিতে পারে, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ এই ঘটনা। মেঘালয়ের পাহাড়ি সৌন্দর্য যেন ঢেকে দিয়েছে এক অজানা আতঙ্ক। এখন শুধু অপেক্ষা… সোনমের হদিশ মেলে কি না।