Mid Day Meal : কেরলের পাথানানথিটা জেলার একটি গ্রামের শিশু, শঙ্কু, হঠাৎ করে খবরের শিরোনামে। কারণ? সে রোজ রোজ উপমা খেতে চায় না। তার জোরালো দাবি — “বিরনানি চাই, উপমা নয়!” আর সেই একরত্তি শিশুর অভিযোগেই বদলে গেল রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ির মিড ডে মিল মেনু।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিও, নজরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
ঘটনাটি সামনে আসে তিন মাস আগে, যখন শঙ্কুর মা তার ছেলের সঙ্গে এক হৃদয়ছোঁয়া ভিডিও ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেন। ভিডিও-তে দেখা যায়, হেলমেট পরা অবস্থায় স্কুলফেরত শঙ্কু মায়ের হাতে বিরিয়ানি খেতে খেতে বলছে, “আমি অঙ্গনওয়াড়িতে বিরনানি, পরিচা কোঝি (চিকেন ফ্রাই) খেতে চাই।” উপমার নাম শুনেই মুখ ঘুরিয়ে নেয় সে।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই তা চোখে পড়ে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে শঙ্কুর সমর্থনে। সবাই একবাক্যে বলছে, বাচ্চারা প্রতিদিন একঘেয়ে খাবার খেতে চায় না। তাদেরও স্বাদ ও ইচ্ছের মূল্য থাকা উচিত।
শিশুর চাহিদা, সরকারের সিদ্ধান্ত
অবশেষে সরকারও সুর বদলাল। মঙ্গলবার, বীণা জর্জ ঘোষণা করেন, কেরলের সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মিড ডে মিলে থাকবে নতুন মেনু —
- এগ বিরিয়ানি
- পোলাও
- ডালের পায়েস
- সোয়া ড্রাই কারি
- নিউট্রি লাড্ডু
তিনি জানান, এই তালিকা তৈরি হয়েছে শিশুদের স্বাদ ও পুষ্টির ভারসাম্য মাথায় রেখে। চিনি ও লবণ কমিয়ে, প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
—
🥚 দুধ ও ডিম বাড়ছে, সকাল-দুপুরে মিলবে খাবার
নতুন ব্যবস্থায় সপ্তাহে আগে যেখানে দু’দিন করে দুধ ও ডিম দেওয়া হত, এখন থেকে তিন দিন করে মিলবে। শিশুদের জন্য সকাল এবং দুপুর — দুই সময়েই খাবার দেওয়া হবে। ছোটখাটো স্ন্যাকসও যুক্ত হচ্ছে তালিকায়।
বীণা বলেন, “এই পরিবর্তন শুধু এক শিশুর ইচ্ছাপূরণ নয়, বরং এক নতুন ভাবনার সূচনা। শিশুদের পুষ্টির সঙ্গে সঙ্গে স্বাদও গুরুত্বপূর্ণ।”
—
🧡 শঙ্কু এখন সেলেব, খুশি গোটা পরিবার
ভিডিওর পর শঙ্কুর পরিবারকে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কেউ বলছেন, “শিশুর মুখ থেকে দেশ চালানোর শিক্ষা।” কেউ আবার লিখেছেন, “এই হচ্ছে গণতন্ত্র — যেখানে এক শিশুর চাহিদাও সরকার শোনে।”
শঙ্কুর মা জানান, “সেদিন বাড়িতে বিরিয়ানি রান্না হয়েছিল, ওকে খাওয়াতে খাওয়াতে ভিডিও করি। কে জানত, ওর ছোট্ট অনুযোগ এত বড় প্রভাব ফেলবে!”
একটা ছোট মুখের বড় কথা বদলে দিল গোটা রাজ্যের নীতি। শঙ্কুর ‘না’ মানেই শুধু বিরিয়ানি নয়, বরং হাজারো শিশুর পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়ার দিকেই এক সাহসী পদক্ষেপ। কেরলের এই সিদ্ধান্ত হয়তো ভবিষ্যতে গোটা দেশের পুষ্টি-নীতির চেহারাই পাল্টে দিতে পারে।