৩১ সপ্তাহের প্রথম গর্ভে, তার মধ্যে গর্ভপাত করানো নাবালিকার জীবনের পক্ষে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ—এই পর্যবেক্ষণ রেখে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট ধর্ষণের শিকার এক নাবালিকাকে সন্তান প্রসবের অনুমতি দিল।
ছুটির দিনে বিচারপতি বিনয় সরাফ একক বেঞ্চে এই রায় দেন। আদালত স্পষ্ট জানায়, রাজ্য সরকারকে এই মেয়ের চিকিৎসা, প্রসবপরবর্তী যত্ন এবং সন্তানের পূর্ণ দায়িত্ব নিতে হবে।
মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে মিলল সতর্কতা
আদালতের কাছে পেশ করা মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, গর্ভস্থ শিশুটি তখন ২৯ সপ্তাহ ৬ দিনের। চিকিৎসকরা জানায়, এই সময় গর্ভপাত করালে নাবালিকার প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই জেলা আদালত এই মামলা হাই কোর্টে পাঠায়।
পরিবার জানাল—গর্ভপাত নয়, সন্তান চাই
হাই কোর্টে নাবালিকা ও তার বাবা-মা একটি চিঠি জমা দেন, যেখানে তাঁরা জানান যে তারা সন্তান প্রসবেই সম্মত। আদালত গায়নোকলজিস্টের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে জানায়, গর্ভাবস্থার যে স্তরে পৌঁছেছে, তাতে গর্ভপাত নয়, সন্তানের জন্মই অধিকতর নিরাপদ।
রাজ্য সরকারকে কঠোর নির্দেশ
আদালত জানায়, রাজ্য সরকারকে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল দিয়ে মেয়েটিকে গর্ভাবস্থা থেকে প্রসব এবং পরবর্তী সময় পর্যন্ত পূর্ণ সহায়তা দিতে হবে। খরচ বহন করবে সরকার। শিশুর পরিচর্যা ও শিক্ষার দায়িত্বও রাজ্যের উপর। এছাড়া, মেয়েটির এবং তার সন্তানের পরিচয় গোপন রাখতে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ নীতি তৈরির পরামর্শ আদালতের
আদালত পরামর্শ দিয়েছে, ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়া নাবালিকাদের জন্য সরকার যেন একটি নির্দিষ্ট নীতি তৈরি করে—যাতে খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
নারীর সম্মতিই সবার আগে
রায়ের শেষে আদালত স্পষ্ট করে দেয়—গর্ভপাতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসা বোর্ড যেন কেবল নিয়মের পেছনে না ছুটে, নারীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থাও বিবেচনায় রাখে। আর সবচেয়ে বড় কথা, মহিলার সম্মতিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।