Vande Bharat : কাটরা থেকে শ্রীনগর—মাত্র ৩ ঘণ্টা। অবশেষে উদ্বোধন হল বহু প্রতীক্ষিত জম্মু ও কাশ্মীরের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মুর শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী স্টেশন থেকে ট্রেনটির শুভ সূচনা করেন।
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর প্রথম সফর
২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলার পাল্টা জবাবে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীর সফরে গেলেন মোদী। এদিন একসঙ্গে দু’টি ট্রেনের সূচনা করেন তিনি—একটি কাটরা থেকে শ্রীনগর, অপরটি শ্রীনগর থেকে কাটরা।
কী বিশেষত্ব এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের?
কাশ্মীরের তুষারাচ্ছন্ন পরিবেশে সারা বছর চলার উপযোগী করে তৈরি হয়েছে এই রেলগাড়ি। কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য—
- -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় চলার ক্ষমতা।
- গরম বাতাসযুক্ত হিটার, তাপ নিরোধক শৌচাগার।
- বরফ বা কুয়াশা জমলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার হয়ে যায় ফ্রন্ট গ্লাস।
- পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের কথা ভেবেই উচ্চমানের আরামদায়ক আসন ব্যবস্থা।
সময় বাঁচাবে ২-৩ ঘণ্টা
জম্মু-কাশ্মীরের উদমপুর-বারামুল্লা রেল প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ার পর এই রেলপথ চালু হল। বর্তমানে জম্মু থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে। এখন তা কমে দাঁড়াবে প্রায় ৩ ঘণ্টায়।
রুট ও ট্রেন সংখ্যা
এই মুহূর্তে দু’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে—
ট্রেন ২৬৪০১/২৬৪০২ (রবিবার বাদে):
কাটরা → সকাল ৮:১০ | শ্রীনগর → ১১:০৮
শ্রীনগর → দুপুর ২:০০ | কাটরা → ৪:৪৮
গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজ: বনিহাল
ট্রেন ২৬৪০৩/২৬৪০৪ (বুধবার বাদে):
- শ্রীনগর → সকাল ৮:০০ | কাটরা → ১০:৫৮
- কাটরা → দুপুর ২:৫৫ | শ্রীনগর → ৫:৫৩
পর্যটন ও পরিকাঠামোতে নতুন দিগন্ত
এই রেল সংযোগ নতুন করে প্রাণ জোগাবে কাশ্মীর উপত্যকার পর্যটন শিল্পে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিগগিরই জম্মু তাওয়ি স্টেশন উন্নয়নের কাজ শেষ হলে, এই বন্দে ভারত ট্রেন সেখান পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।
মোদীর ঘোষণা: ‘কাশ্মীর এখন ভারতের মূল স্রোতে’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন—“আজ কাশ্মীর শুধু ভূগোলগতভাবে নয়, মানসিকভাবেও ভারতের মূল স্রোতে যুক্ত হয়েছে। এই উন্নয়ন প্রমাণ করে, নতুন ভারত কোনও বাধায় থেমে থাকে না।”
ছবিতে বন্দে ভারত
কাশ্মীরের তুষারাচ্ছন্ন পটভূমিতে দাঁড়িয়ে সাদা-নীল রঙের উজ্জ্বল ট্রেন। আর তার পেছনে ভারতের জাতীয় পতাকা—এই দৃশ্য আজ গোটা দেশকে গর্বিত করেছে।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের সঙ্গে বাকি ভারতের মধ্যে রেল সংযোগ ছিল বহুদিনের স্বপ্ন। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সূচনা সেই স্বপ্ন পূরণের পথেই একটি বড় পদক্ষেপ। উন্নত প্রযুক্তি, দ্রুত গতির পাশাপাশি রাজনীতিক, অর্থনৈতিক ও পর্যটন পরিকাঠামোতেও এই ট্রেন তৈরি করবে এক নতুন ইতিহাস।