Vande Bharat : কাশ্মীরের বুক চিরে ছুটছে বন্দে ভারত। কিন্তু এই যাত্রা শুধুই পাহাড়, সুড়ঙ্গ আর সৌন্দর্যের গল্প নয়—এর পিছনে আছে এক নিঃশব্দ যুদ্ধ। কারণ, প্রতিটি রেল কোচে নজরদারি চালাচ্ছে বন্দুক হাতে কমান্ডো।
নতুন অধ্যায়: ভূস্বর্গে বন্দে ভারত
তিন ঘণ্টার সফরে শ্রীনগর থেকে কাটরা—এই প্রথম কাশ্মীর উপত্যকার দুই প্রান্তকে রেলপথে যুক্ত করল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। একদিকে সুড়ঙ্গ, অন্যদিকে পাহাড়ি ঝুঁকি—এই পথ যেন নিজেই এক চ্যালেঞ্জ। এতদিন পর্যন্ত এই পথে রেল পৌঁছায়নি। এখন তা সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তি আর সাহসিকতায়। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এই যাত্রা কতটা নিরাপদ?
সন্ত্রাসের ছায়া, অতএব নজিরবিহীন নিরাপত্তা
কাশ্মীরে সন্ত্রাসের ছায়া কখনও পুরোপুরি মুছে যায়নি। সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলা ফের মনে করিয়ে দেয়, এখানকার শান্তি ক্ষণিকের হতে পারে। তাই শ্রীনগর-কাটরা পথে চলা বন্দে ভারত ট্রেনে লাগু হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা।
রেলপুলিশ ফোর্সের এলিট ইউনিট CORAS (Commando for Railway Security) মোতায়েন করা হয়েছে প্রতিটি ট্রিপে। দিনে দু’বার যাওয়া-আসা করে এই ট্রেন। প্রতিবারই থাকবে অন্তত ১৫ জন প্রশিক্ষিত কমান্ডো, যারা ভারী অস্ত্রে সজ্জিত। তাঁদের একটাই কাজ—প্রতিটি যাত্রী, প্রতিটি বগিকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে রাখা।
মোদীর সফর আর রেলবিপ্লব
শুক্রবার পহেলগাঁও হামলার ঠিক পরেই কাশ্মীরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেলসেতু এবং এই নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন করেন তিনি। হাতে জাতীয় পতাকা তুলে ধরেই ঘোষণা হয়—এবার কাশ্মীরও ভারতীয় রেলের মূল নেটওয়ার্কের অংশ।
কত খরচে ঘোরা যাবে কাশ্মীর?
এই হাই-টেক ট্রেনে চড়তে এখন একেবারেই বেশি খরচ পড়ছে না।
- চেয়ার কার ভাড়া: ₹৭১৫
- এক্সিকিউটিভ ক্লাস: ₹১৩২০
ট্রেনটি সকাল ৮:১০ মিনিটে কাটরা থেকে ছাড়ে এবং ১১:০৮ মিনিটে পৌঁছয় শ্রীনগর। মাঝে কেবল বানিহাল স্টেশনে ২ মিনিটের স্টপেজ। একেবারে ঝটপট, ঝুঁকিহীন যাত্রা—অন্তত এখনকার পরিকল্পনা তেমনই।
শুধু প্রযুক্তি নয়, এখন বিশ্বাসের প্রশ্ন
এই বন্দে ভারত শুধু এক যান্ত্রিক বিপ্লব নয়। এটি মানুষের মনে স্থায়ী বিশ্বাস তৈরি করার প্রতীক। একসময়ে যেখানে বোমা, গুলি আর সেনার কড়াকড়িতে ঘেরা ছিল জীবন, সেখানেই এখন ছুটছে আধুনিক রেল। আর এই রেলকে নিরাপদ রাখছে ভারী অস্ত্রধারী কমান্ডো বাহিনী।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের শান্তি এখন বন্দে ভারতের গতির সঙ্গে ছুটছে। কিন্তু তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলপথে নামানো হয়েছে একপ্রকার যুদ্ধকালীন পরিকল্পনা। একদিকে উন্নয়ন, অন্যদিকে নিরাপত্তার এই যুগলবন্দি কাশ্মীরকে নতুন করে চিনিয়ে দিচ্ছে গোটা দেশকে।