US Politics : বন্ধুত্বের পরিণতি অনেক সময়ই নাটকীয় হয়, কিন্তু ইলন মাস্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বন্দ্ব যেন একেবারে হলিউডি চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে! এক সময় একে অপরের পরম বন্ধু ছিলেন তাঁরা। আজ? খোলা ময়দানে বাক্যবাণ ছুঁড়ছেন একে অপরের দিকে।
স্পেসএক্স বনাম হোয়াইট হাউস: কে শেষ হাসি হাসবে?
ইলন মাস্ক সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে দাবি করেছেন, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম রয়েছে কুখ্যাত জেফরি এপস্টেইন ফাইলে। এবং সেই কারণেই, সেই ফাইল এখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হচ্ছে না। “সত্যিটা খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসবে”—এই মন্তব্যে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটান মাস্ক।
এই অভিযোগের ঠিক ঘণ্টাখানেক আগেই ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, মাস্কের সংস্থাগুলির সরকারি অনুদান এবং চুক্তি বাতিল করা হবে। উত্তরে মাস্ক জানিয়ে দেন, স্পেসএক্স-এর গুরুত্বপূর্ণ মিশন, ‘ড্রাগন স্পেসক্রাফ্ট’-এর নির্মাণ আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের গদি থেকে ট্রাম্পকে সরাতে চায় ইলন!
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। এক এক্স ব্যবহারকারী লিখেছিলেন—“ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হোক, প্রেসিডেন্ট হোক জেডি ভ্যান্স!” সেই পোস্টে ইলন মাস্ক নিজে গিয়ে ‘Yes’ কমেন্ট করেন। তাতেই জল্পনা চরমে উঠেছে—তাহলে কি সত্যিই ট্রাম্পের বিদায় চান মাস্ক?
এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউস ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে, ট্রাম্প শিবিরে প্রবল অসন্তোষ। একদা যাঁকে রাষ্ট্রপতির মঞ্চে ডেকে publicly ধন্যবাদ জানানো হয়েছিল, যাঁর জন্য আলাদা প্রশাসনিক পদ পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল, সেই ইলন মাস্ক আজ সবচেয়ে বড় ‘বিপদ’ হয়ে উঠেছেন ট্রাম্পের জন্য।
বন্ধুত্ব থেকে বিভাজন: কীভাবে তৈরি হল এই ফাটল?
২০১৬-১৭ সাল থেকেই ইলন মাস্ক ছিলেন ট্রাম্পের অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহযোগী। হোয়াইট হাউসে প্রভাবশালী হিসেবে কাজ করেছেন, প্রচারে বিপুল অর্থ ঢেলেছেন, এমনকী Tesla এবং SpaceX-এর চুক্তিতে ছাড়ও পেয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে।
কিন্তু দিন কয়েক আগে প্রেসিডেন্ট জনকল্যাণ বিলকে ‘দুর্বল পদক্ষেপ’ বলে চিহ্নিত করেন মাস্ক। এরপরই তিনি নিজের প্রশাসনিক পদ ত্যাগ করেন। ট্রাম্প সেই পদক্ষেপকে আখ্যা দেন ‘হতাশাজনক’।
দুই মস্তিষ্ক, দুই দিক—এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ কী?
একদিকে যেখানে ট্রাম্প বলছেন, “ইলন মাস্কের কোম্পানিগুলো বহু আগে থেকেই সরকারি টাকায় চলছে, তা বন্ধ হওয়া উচিত ছিল,” সেখানেই মাস্ক দাবি করছেন, “আমার সমর্থন না পেলে ট্রাম্প প্রেসিডেন্টই হতে পারতেন না!”
এই কথোপকথন শুধু দুই ব্যক্তির নয়, বরং আমেরিকার রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণের বার্তা দিচ্ছে। প্রযুক্তি বনাম পুরনো রাজনীতি—এই দ্বন্দ্বের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার।
শত্রুতা নাকি নতুন খেলা?
বন্ধুত্বের গল্প যদি শুরু হয়েছিল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রবেশে, তাহলে শেষটা যেন যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে চলছে। ট্রাম্প বনাম মাস্ক, এই দ্বন্দ্বে কে জিতবেন? তা বলবে ভবিষ্যৎ, তবে আজকের দিনে এতটুকু স্পষ্ট—এই দুই প্রাক্তন বন্ধুর সম্পর্ক আর আগের মতো থাকবে না।