USA Citizenship : ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার বাজিমাত করলেন মার্কিন রাজনীতিতে! প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে এইবার একেবারে নাগরিকত্ব বিক্রির পথে হাঁটলেন তিনি। বুধবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করলেন “গোল্ড কার্ড”, যার মাধ্যমে ৫ মিলিয়ন ডলার দিলেই মিলবে আমেরিকার নাগরিকত্বের ছাড়পত্র! প্রশ্ন উঠছে, এটা কি সত্যিই পাকাপাকি নাগরিকত্ব দেবে, না কি শুধু আরেকটা রাজনৈতিক গিমিক?
কী এই ‘গোল্ড কার্ড’?
এই গোল্ড কার্ড একটি নতুন ধরনের স্পেশাল ভিসা। যার সাহায্যে যে কেউ আমেরিকায় প্রবেশ করতে পারবেন এবং দ্রুত নাগরিকত্বের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। ট্রাম্প বলছেন, এটা নাকি “বিশ্বের সেরা দেশ ও মার্কেটে প্রবেশের সেরা সুযোগ”। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আসলে EB-5 ভিসার আপগ্রেডেড সংস্করণ, যেখানে ৮–১০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করে গ্রিন কার্ড পাওয়া যায়। এবার সেই অঙ্ক দ্বিগুণ করে নাগরিকত্বের গ্যারান্টি দিচ্ছে এই স্কিম।
খরচ কত? কীভাবে আবেদন করবেন?
ট্রাম্পের ঘোষণায় বলা হয়েছে, আবেদনকারীদের খরচ করতে হবে ৫ মিলিয়ন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে trumpcard.gov ওয়েবসাইটে। সেখানে নাম, ইমেইল, বর্তমান ঠিকানা ও ব্যক্তিগত না ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য, সেই তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে। এই সুযোগ আপাতত দেওয়া হচ্ছে ইউরোপ, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বাসিন্দাদের।
সত্যিই কি মিলবে নাগরিকত্ব?
এখানেই আসে বড় প্রশ্ন—গোল্ড কার্ড মানেই কি নাগরিকত্ব? না, সরাসরি নয়। ট্রাম্পের ঘোষণায় নাগরিকত্ব শব্দটি যতটা জোর দিয়ে এসেছে, ততটাই অস্পষ্ট এটির বাস্তবিক রূপ। এটি একটি দ্রুত প্রবেশাধিকার ও নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রাথমিক পথ।
তবে নাগরিকত্ব পেতে গেলে এখনো ন্যাচারালাইজেশন প্রসেস-এর নিয়মগুলোই মানতে হবে। যেমন—
-
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা
-
ভালো চরিত্র
-
নির্দিষ্ট সময় মার্কিন মাটিতে বসবাস
-
কর সংক্রান্ত নিয়ম পালন
অর্থাৎ, টাকা দিলেই নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে—এই দাবি কিছুটা বিভ্রান্তিকর।
ট্রাম্পের আসল উদ্দেশ্য কী?
একদিকে ট্রাম্প সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন বন্ধের কথা বলছেন, অন্যদিকে এই স্কিমে ধনী বিদেশিদের স্বাগত জানাচ্ছেন। কেন?
কারণ, আমেরিকার অর্থনীতি এখন ঘাটতির মুখে। গোল্ড কার্ড চালু করে ট্রাম্প চাচ্ছেন—
-
মার্কিন জাতীয় তহবিল বাড়ানো
-
ধনী বিনিয়োগকারীদের টেনে এনে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা
তিনি মনে করেন, নাগরিকত্বকে মূলধনী বিনিয়োগের সঙ্গে জুড়ে দিলে, দেশও উপকৃত হবে, এবং বিদেশিরাও সহজে আমেরিকার স্বপ্নে পৌঁছাতে পারবেন।
ভারতের জন্য এর প্রভাব কী?
ভারতবর্ষের অসংখ্য মানুষ প্রতি বছর আমেরিকার দিকে পা বাড়ান H-1B ভিসা বা পড়াশোনার কারণে। তাদের অনেকের কাছেই নাগরিকত্ব এখনো স্বপ্ন। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় ভারতের বহু হাই-নেটওয়ার্থ ব্যক্তি (HNI) এবার সরাসরি গোল্ড কার্ডের মাধ্যমে নাগরিকত্বের চেষ্টা করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে—এটা গরিব বা মধ্যবিত্ত ভারতীয়র নাগালের বাইরে। এটা ধনীদের জন্য ট্রাম্পের স্পেশাল অফার মাত্র।
ট্রাম্পের গোল্ড কার্ড নিয়ে এখনই অনেক কৌতূহল, আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনাও চলছে। এটা সত্যিই কি “গোল্ডেন টিকিট” না কি শুধুই এক রাজনৈতিক প্রচার—তা সময়ই বলবে। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার, নাগরিকত্ব এখন শুধু অধিকার নয়, ব্যবসার জিনিসও হয়ে দাঁড়াচ্ছে।