Ahmedabad Crash : প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে, তবুও দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মানুষের মনে এখনও গেঁথে আছে সেই ভয়াবহ দৃশ্য—আমেদাবাদের বিজে মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের উপর আছড়ে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। উড়ানের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় সবাই। বেঁচে ফেরেন মাত্র একজন। আর এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই উঠে এল নতুন চাঞ্চল্য।
প্রথম পৌঁছন রাজু প্যাটেল, কী বললেন তিনি?
দুর্ঘটনাস্থলের একেবারে কাছেই থাকেন রাজু প্যাটেল, বয়স ৫৬। তিনি একজন নির্মাণ ব্যবসায়ী। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সবার আগে তিনিই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তাঁর কথায়, “প্রথম ১৫–২০ মিনিট ধ্বংসস্তূপের ধারে যেতেও পারিনি। কোনও স্ট্রেচার ছিল না আমাদের কাছে। শাড়ি আর চাদর দিয়েই উদ্ধার শুরু করি। জীবনের থেকে বড় কিছু তখন আর ছিল না।”
রাজু জানান, তাঁরা সেদিন উদ্ধার করেন—
-
৭০ ভরি সোনার গয়না
-
৮০,০০০ টাকা নগদ
-
গীতা ও একাধিক ভারতীয় পাসপোর্ট
এই সমস্ত জিনিস তাঁদের উদ্ধারকারী দল পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ভয়াবহ আগুন, কিন্তু মানুষ রইল অগ্রগণ্য
রাজু প্যাটেল শুধু এক জন ব্যবসায়ী নন, এক জন মানবিক যোদ্ধাও। এর আগেও ২০০৮ সালে আমেদাবাদ বিস্ফোরণের সময় উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। তাঁর বক্তব্য, “সেই আগুনের তীব্রতা… আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না।” এই কারণেই তাঁকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। কেউ তাঁকে বলছেন ‘বাস্তবের হিরো’, কেউ বা বলছেন, “রাজুরা থাকেন বলেই দেশ বেঁচে থাকে।”
সরকারও পাশে, সম্মানিত করা হতে পারে রাজুকে
গুজরাটের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংভি প্রশংসা করেছেন প্যাটেল ও তাঁর দলের। বলেছেন, “এই ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিকদের এই ভূমিকা অমূল্য।” বহু নাগরিক সংগঠন তাঁকে ভবিষ্যতে জরুরি পরিষেবার অফিসিয়াল স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে যুক্ত করতে চাইছে।
প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, এত মূল্যবান জিনিস কীভাবে এল?
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে এমন এত সোনা ও টাকা কার ছিল? যাত্রীদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকেই কি এগুলি মিলেছে? কোনও পাচারচক্র ছিল কি? তদন্ত চলছে। তবে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যাগের তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাঁচলেন একজন, বললেন অনেক কিছু
একমাত্র জীবিত যাত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মৃতদের স্মরণ করে তিনি বলেন, “প্রত্যেক জীবন অমূল্য। উদ্ধারকারীরা এই মূল্যবোধেরই প্রতীক।”
মানবিকতা আর সাহসিকতা—এই দুইয়ের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবেন রাজু প্যাটেল ও তাঁর দল। সোনার থেকেও অনেক মূল্যবান হয়ে উঠল তাঁদের সেই মুহূর্তের সাহসিকতা। ধ্বংসের মধ্যেও কিছু আশার আলো ঠিক জ্বলে ওঠে—এই ছিল তারই এক নিদর্শন।