রবিবার দুপুরে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিজেপির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সভা ছিল। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি নেতা আশিস ঘোষ। এই সভায় বক্তব্য রাখতে উঠে অমিত শাহ একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি কটাক্ষ
ভাষণের শুরুতেই অমিত শাহ বলেন, “শুভেন্দু দাঁড়ালেই দিদি ভয় পান। গণতন্ত্রে হিংসার জায়গা নেই। একবার হিংসা ছাড়া ভোট করান, তখনই বোঝা যাবে, আসল বাস্তব কী।” অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী ভোটে জয়লাভ করলেও তা হিংসা ও ভয় দেখিয়ে হয় বলেই দাবি করেন শাহ।
“২০২৬-এ বাংলা বিজেপির”—সরাসরি ভবিষ্যদ্বাণী শাহের
আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে অমিত শাহ বলেন, “২০২৬-এ বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। আর তখন যারা ভোট পরবর্তী হিংসায় আমাদের কর্মীদের মেরেছে, তাদের খুঁজে বার করে শাস্তি দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, ২০১৭ সালের পর বিজেপি ২০১৯-এ প্রস্তুতি নেয়, ২০২১-এ ৭৭টি আসন জেতে, আর ২০২৪-এ লোকসভায় ৯৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে থাকে। ১৪৩টি আসনে ৪০%–এর বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। তাই এবার সরকার গঠনের খুব কাছাকাছি বিজেপি।
“ভোট নয়, বাংলায় নিরাপত্তাও বড় ইস্যু”
শুধু নির্বাচন নয়, বাংলায় নিরাপত্তার বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন শাহ। বলেন, “বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধ করা এখন দরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদে এরা ঢুকছে, ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে। কিন্তু এটা আর বেশি দিন চলবে না।” এছাড়াও, মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক হিংসা ও BSF মোতায়েন সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের ‘অসহযোগিতা’ নিয়েও তিনি তীব্র সমালোচনা করেন।
সিঁদুর অপারেশন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ
সেনাবাহিনীর অপারেশন ‘সিঁদুর’ প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “পাকিস্তানকে মোদী সরকার যেমন জবাব দিয়েছে, তা গর্বের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সিঁদুর নিয়ে রাজনৈতিক মন্তব্য করেন, মুসলিম ভোটারদের খুশি করতে এর বিরোধিতা করেন। এটা অপমান।” এই মন্তব্যে মমতার ধর্মীয় রাজনীতিকে একপ্রকার ‘ভোটের খেলা’ বলেই তুলে ধরেন শাহ।
তৃণমূলকে দায়ী করলেন হিংসার জন্য
রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় তৃণমূল নেতাদের যুক্ত থাকার অভিযোগ করেন শাহ। বলেন,
“আমাদের এক অফিসার হাইকোর্টে যাওয়ার পরই BSF মোতায়েন হয় এবং হিন্দুদের বাঁচায়। আমি স্পষ্ট বলছি—বাংলার এই হিংসা রাজ্য সরকারের মদতে চলছে। এটা রাজ্য পোষিত হিংসা। সন্দেশখালিতে যা হয়েছে, তার দায় তৃণমূলকেই নিতে হবে।”
এবার আর ভয় নয়, রুখে দাঁড়াবে বিজেপি
সাংগঠনিক সভার মাধ্যমে অমিত শাহ বুঝিয়ে দিলেন—আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপি শুধু প্রস্তুতই নয়, আত্মবিশ্বাসীও।
ভোট নয়, বাংলার ভবিষ্যৎ, গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে এবার সরাসরি মুখোমুখি লড়াই শুরু।