কাশ্মীর সীমান্তে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ যেন পাকিস্তানের চোখে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জবাবে সীমান্তের নিরীহ গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ চালিয়েছে পাকিস্তান। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলা।
শুক্রবার সেই পুঞ্চেই পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে পাক গোলাবর্ষণে নিহত ১৪ জন নাগরিকের পরিবারের হাতে তুলে দিলেন সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র।
‘চাকরি ক্ষতিপূরণ নয়, প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রতীক’
পুঞ্চে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেন, “আমরা জানি, সরকারি চাকরি দিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনার ক্ষতিপূরণ হয় না। তবু এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, আমরা কথা রেখেছি। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের পাশে থাকার এ এক ছোট চেষ্টা।” এই বার্তা শুধু সহানুভূতির নয়, সরকারের তরফে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিতও বটে।
জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতের হামলা, পাল্টা অসামরিক এলাকায় পাকিস্তানের গোলা
অমিত শাহ সাফ জানিয়ে দেন, “আমরা জঙ্গিদের উপর আঘাত হেনেছিলাম। কিন্তু পাকিস্তান সেটা নিজের উপর মনে করে নিরীহদের উপর হামলা চালিয়েছে। গোটা বিশ্ব জানে, ওরাই সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয়দাতা।”
তিনি আরও বলেন, “এই হামলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক স্তরে নিন্দার ঝড় উঠেছে, এবং ভারতীয় সেনা যোগ্য জবাব দিয়েছে।” এদিন বিএসএফ ক্যাম্পের প্রশংসা, গুরুদ্বার ঘুরে দেখলেন শাহ। সেখানে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের মনোবল বাড়ান।
‘অপারেশন সিঁদুর’- সেনার সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে বিধ্বস্ত একটি গুরুদ্বারও ঘুরে দেখেন শাহ। পাশাপাশি আসন্ন অমরনাথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন তিনি।
‘ভারত নিরীহের রক্তপাত সহ্য করবে না’
সর্বশেষে অমিত শাহ জানিয়ে দেন,“ভারতীয় সেনা প্রতিটি আঘাতের জবাব আরও কড়া, আরও নিখুঁতভাবে দেবে। পাকিস্তান যদি ভাবছে নিরীহদের উপর আক্রমণ করে তারা রক্ষা পাবে, তাহলে ভুল করছে। ভারত কখনও এই ধরনের সন্ত্রাস বরদাস্ত করবে না।”
অমিত শাহের সফর রাজনৈতিক নয়, বরং একটি মানবিক বার্তা বহন করেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশ, সেনা ও সরকার যে ঐক্যবদ্ধ সেটা তিনি প্রমাণ করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আজকের এই সফর বিশ্বকে এই বার্তাই দিয়েছে যে ভারত দুর্বল নয়, সর্বদা সজাগ ও প্রস্তুত।