বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ফের খবরের শিরোনামে। বোলপুর থানার পুলিশ তাঁকে দু’দিন ধরে তলব করলেও তিনি হাজিরা দেননি। বরং, নিজের ‘শারীরিক অসুস্থতা’কে সামনে রেখে আইনি প্রক্রিয়া এড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলেই মনে করছেন অনেকেই।
‘কী হয়েছে আপনার?’—জবাবে অনুব্রতের গলার ব্যথা, কাশি, জ্বর!
সোমবার সন্ধ্যায় অনুব্রত মণ্ডল আনন্দবাজার ডট কমকে ফোনে বলেন, “আমার গলায় খুব ব্যথা, কাশিও হচ্ছে। জ্বর রয়েছে, নাক দিয়ে জল পড়ছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “ভেবেছি, কাল কোভিড টেস্ট করিয়ে নেব। বেশি কথা বললে গলায় লাগছে।” lসেখানে কেশে ফোন কেটে দেন তিনি। ফলে আর কিছু প্রশ্ন করার সুযোগ পাওয়া যায়নি।
মেডিক্যাল রিপোর্টেই যত বিপত্তি! হিটলার চৌধুরীর সই নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের দেওয়া মেডিক্যাল রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেই রিপোর্টে সই করেছেন ডঃ হিটলার চৌধুরী, যিনি রামপুরহাট ১ ব্লকের বিএমওএইচ পদে কর্মরত। প্রশ্ন উঠেছে—একজন সরকারি চিকিৎসক কীভাবে বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্টে সই করলেন?
সিএমওএইচ শোভন দে জানিয়েছেন, “সরকারি চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখাতে পারেন না। রিপোর্ট এলে খতিয়ে দেখব।” রিপোর্টের সত্যতা ও বৈধতা নিয়ে তদন্ত শুরু হতে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলছে।
সিবিআই হোক বা এখন বীরভূম পুলিশ—তলব মানেই ‘অসুস্থতা’!
এটা প্রথমবার নয়, অতীতেও সিবিআইয়ের তলবের সময় অনুব্রত হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হন। এবার বোলপুর থানার ডাক পেতেই আবার সেই চেনা ছক—অসুস্থতার অজুহাত।
তাঁর বিরুদ্ধেই সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক অডিও ক্লিপে বোলপুর থানার আইসিকে হুমকি ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা গিয়েছে। যদিও প্রথমে তিনি অডিওতে থাকা কণ্ঠস্বর অস্বীকার করেন। পরে দলের চাপে ক্ষমাও চান।
চিকিৎসকের যোগসাজশ? রাজনৈতিক চাপের আশঙ্কা চিকিৎসক মহলে
তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মলয় পিট শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার। তাঁর সঙ্গে হিটলার চৌধুরীর যোগসূত্র কি? এবং এই যোগসূত্রে কি রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে?—এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে জেলাজুড়ে।
একাধিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, হিটলার চৌধুরী চিনের একটি কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। কিন্তু তাঁর সই কি আইনত গ্রহণযোগ্য? না কি এই রিপোর্ট আসলে পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা?
গৃহবন্দি কেষ্ট, কোভিড না কৌশল?
বর্তমানে অনুব্রত মণ্ডল গৃহবন্দি। তিনি জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার কোভিড পরীক্ষা করাবেন। তবে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, এটি পরিকল্পিতভাবে তদন্ত এড়ানোর একটি চাল।
গলাব্যথা, কাশি ও জ্বরের উপসর্গ নিশ্চয়ই হালকা নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁর রোগের সঠিক পরীক্ষা কি আদৌ হয়েছে? নাকি শুধুই সময় কাটানোর কৌশল?