TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Bullet Train : মাত্র ১৫ বছরেই বিশ্বের সেরা! চিনের রেল বিপ্লবের মাঝে ভারত এখনও স্বপ্নের বুলেট ট্রেনের অপেক্ষায়!

মাত্র ১৫ বছরে গড়ে তুলল ৪৭,০০০ কিমির হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ক! ভারত যখন প্রথম বুলেট ট্রেন চালুর অপেক্ষায়, তখন রেল বিপ্লব ঘটিয়ে নজির গড়ল চিন।

Debapriya Nandi Sarkar

Bullet Train : ভারতে এখনো চালু হয়নি প্রথম বুলেট ট্রেন। মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে তার নির্মাণ কাজ চললেও, পুরো ব্যবস্থার দেখা পেতে ভারতবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে আরও অন্তত তিন বছর। অন্যদিকে, চিন মাত্র ১৫ বছরে গড়ে তুলল বিশ্বের বৃহত্তম হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ক। গতি, পরিকাঠামো ও বিস্তারের নিরিখে তারা ইতিমধ্যেই পিছনে ফেলেছে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশকে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কীভাবে শুরু, কোথায় পৌঁছেছে চিন?

চিনে হাই স্পিড রেলের যাত্রা শুরু ২০০৩ সালে, কুইনহুয়াংদাও থেকে শেনিয়াংশি রুট দিয়ে। যদিও প্রথম যাত্রী পরিবহণ শুরু হয় ২০০৮ সালে, তারপর থেকে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হয়েছে রেললাইন। এখন চিনের হাই স্পিড রেল ট্র্যাক ছড়িয়ে রয়েছে ৪৭,০০০ কিমি এলাকাজুড়ে—যা বিশ্বের মোট হাই স্পিড রেলের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ!

এখন পর্যন্ত চিনের ২৩টি প্রদেশ ও হংকং এই পরিষেবার আওতায় এসেছে। একমাত্র ম্যাকাও এখনো এই যোগাযোগের বাইরে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

চিনের প্রধান রেল রুট ও প্রযুক্তি বিস্ময়

চিনের হাই স্পিড রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রুট হল বেইজিং-সাংহাই করিডোর, যার দৈর্ঘ্য ১,২১৮ কিমি ও রয়েছে মোট ২৪টি স্টেশন। আরেকটি বড় রুট বেইজিং থেকে গুয়াঙঝৌ-শেনঝেন পর্যন্ত, যা বিশ্বের দীর্ঘতম একফেজ নির্মাণ রেলপথ হিসেবে স্বীকৃত।

তাছাড়া, উহান-গুয়াংঝৌ রেলপথ (৯৬৮ কিমি) থেকেও প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন দ্রুতগামী ট্রেনে। প্রতিটি ট্রেন গড়ে ঘণ্টায় ৩৫০ কিমি বেগে চলে, যা পৃথিবীর অন্যতম দ্রুততম ট্রেন পরিষেবা।

ভারতের অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ভারত প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্প শুরু করেছে জাপানের সহযোগিতায়। মুম্বই থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত ৫০৮ কিমি এই করিডোরের কাজ ইতিমধ্যেই অনেকটাই এগিয়েছে। তৈরি হয়েছে প্রায় ৩০০ কিমির ভায়াডাক্ট। সরকারের লক্ষ্য, ২০২৮ সালের মধ্যেই চালু হবে দেশের প্রথম হাই স্পিড ট্রেন। তবে এই গতি চিনের তুলনায় ধীরই বলেই মনে করছেন পরিকাঠামো বিশেষজ্ঞরা।

ভবিষ্যতের দৌড়ে চিন কতদূর?

২০২৫ সালের মধ্যেই চিন তার হাই স্পিড রেল নেটওয়ার্ক ৫০,০০০ কিমির গণ্ডি ছাড়াতে চায়। এবং এই বিস্তার ও আধুনিকীকরণের পেছনে আগামীতে প্রায় ৯০০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে চিন সরকারের।

তবে এত বিপুল ব্যয়ের জন্য কিছুটা উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, নির্মাণ খরচ ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে এবং ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়ে যেতে পারে ১ ট্রিলিয়ন ডলার। এছাড়া, চিনের জনসংখ্যা কমার প্রবণতাও ভবিষ্যতে এই পরিকাঠামোর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

ভারত উন্নয়নের পথে হাঁটছে, তাতে সন্দেহ নেই। তবে চিন যে গতিতে হাই স্পিড রেল পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে, তা নিঃসন্দেহে বিশ্বের কাছে এক শিক্ষণীয় উদাহরণ। প্রযুক্তির ব্যবহারে এবং সুপরিকল্পিত নির্মাণে তারা প্রমাণ করেছে, দৃঢ় ইচ্ছা আর বাস্তবায়নের ক্ষমতা থাকলে ১৫ বছরই বদলে দিতে পারে একটি দেশের পরিবহণ ব্যবস্থাকে।

ভারতের কাছেও সময় এখন নিজেদের উন্নয়ন গতি পুনর্বিবেচনা করার। কারণ আগামী দিনের দৌড়ে কে কতটা এগিয়ে যাবে, তা অনেকটাই নির্ভর করবে এই হাই স্পিড পরিকাঠামোর উপর।