TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

রাত বাড়লেই ‘ট্যাক্সি ফাঁদ’, হাওড়া স্টেশনে যাত্রীদের রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতা!

হাওড়া স্টেশন ছেড়ে রাতে বাড়ি ফিরতে গিয়ে পড়ছেন ট্যাক্সি দালালচক্রের জালে! সরকারি পার্কিংয়ে অতিরিক্ত ভাড়া, হেনস্থা—দৈনন্দিন দুর্ভোগে বিপর্যস্ত যাত্রীরা।

Debapriya Nandi Sarkar

রেল পুলিশের ধরপাকড়ের পরে হাওড়া স্টেশনের রিজার্ভেশন টিকিটের দালালচক্রে কিছুটা রাশ টানা গেলেও, এখন এক নতুন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। রাত হলেই শুরু হয় ট্যাক্সি দালালদের রমরমা। যাত্রীসাধারণকে ঠকাতে চলছে এক সুপরিকল্পিত দালালি নেটওয়ার্ক।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

‘যাত্রীসাথি’র গাড়ি নেই, রাত বাড়তেই বাড়ছে ভোগান্তি

রাজ্য সরকারের ‘যাত্রীসাথি’ অ্যাপ চালুর উদ্দেশ্য ছিল ট্যাক্সি বুকিং সহজ ও স্বচ্ছ করা। কিন্তু রাত যত বাড়ে, ততই এই অ্যাপ থেকে গাড়ি পাওয়া কঠিন হয়ে ওঠে। সেই শূন্যস্থান埋য়ই কাজে লাগিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে এক শ্রেণির দালাল। স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এই ব্যক্তিরা যাত্রীদের ‘সহযোগিতা’ করার নাম করে তাঁদের নিয়ে যান পার্কিং জ়োনে থাকা ট্যাক্সিগুলির কাছে।

গন্তব্যের আগে বাড়তি দাবি, না মানলে তর্ক-বচসা

ট্যাক্সির ভাড়া নিয়ে শুরু হয় আসল খেলা। যাত্রীরা গন্তব্যের জন্য একটি নির্দিষ্ট ভাড়া ঠিক করেও, গাড়ি ছাড়ার মুখে হঠাৎই দাবি করা হয় অতিরিক্ত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ‘পার্কিং ফি’। অথচ এই সরকারি পার্কিং জোনে রেলের নির্ধারিত চার্জ মাত্র ৭১ টাকা। এই অতিরিক্ত টাকাই তুলে নিচ্ছে দালালচক্র ও কিছু চালক মিলে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

যাত্রীদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিবাদ করলে, তাঁদের ঘিরে ফেলে একাধিক দালাল ও চালক। ভয় দেখানো থেকে শুরু করে হেনস্থা—সবই চলছে প্রকাশ্যে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে এমন একাধিক ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

অ্যাপ ক্যাব নয়, ‘দালালি ট্যাক্সি’ই রাতের রাস্তায় আধিপত্য

যাত্রীদের অভিযোগ, যাত্রীসাথি বা অ্যাপ ক্যাব না পেয়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা দালালের কথায় ভরসা করছেন। আর সেই সুযোগে চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকাচ্ছেন। গঙ্গার ধারে নিউ কমপ্লেক্স ও ওল্ড কমপ্লেক্সের মাঝামাঝি থাকা পার্কিং স্পট এখন দালালদের দখলে। অ্যাপ ছাড়াও পার্ক করা প্রাইভেট ট্যাক্সিগুলি নিয়ন্ত্রণ করছে এই চক্র।

‘পুলিশ জানে, কিন্তু নড়চড় নেই’—অভিযোগ যাত্রীদের

এই দুর্ভোগ সম্পর্কে রেল পুলিশ অবগত হলেও, যাত্রীদের অভিযোগ, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কয়েক বার পুলিশে অভিযোগ করলেও চক্রের কাজকর্মে তেমন কোনও ভাটা পড়েনি। অনেক সময় ট্যাক্সি না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। সেই সময় ভোররাতের ট্রেন যাত্রার ক্লান্তি মাথায় নিয়েই এই জটিলতায় পড়ছেন অনেকেই।

পুলিশি তদন্ত শুরু, তবু প্রশ্ন—সমাধান কবে?

শুক্রবার রাতে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার ভিডিও সামনে আসার পরে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু যাত্রীদের প্রশ্ন, বারবার অভিযোগের পরেও কেন এমন অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না? সরকারি অ্যাপ যখন পর্যাপ্ত পরিষেবা দিতে পারছে না, তখন কড়া নজরদারি ছাড়া এই দৌরাত্ম্য থামবে না বলেই মনে করছেন শহরের পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা।

উল্লেখ্য, হাওড়া স্টেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি রেল কেন্দ্র থেকে রাতের বেলা বাড়ি ফিরতে গিয়ে যদি যাত্রীদের এমন হয়রানির শিকার হতে হয়, তা হলে প্রশ্ন ওঠে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক নজরদারির উপর। যাত্রীসাধারণের স্বস্তি ফেরাতে জরুরি দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপ। নয়তো রোজকার ভোগান্তিই ভবিতব্য হয়ে উঠবে যাত্রীদের কাছে।