TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

রুই মাছ খেলেই হতে পারে বিপত্তি? কানপুরের গবেষণায় ধরা পড়ল ঘাতক ধাতু!

কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় গঙ্গার রুই মাছের দেহে মিলেছে উচ্চ মাত্রার সীসা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়ামসহ অন্যান্য বিষাক্ত ধাতু—জেনে নিন কী ঝুঁকি, কী সাবধানতা ও পরবর্তী করণীয়।

Debapriya Nandi Sarkar

মানুষের প্রিয় খাবার রুই মাছ যেন বিপদের বার্তা নিয়ে এল। পাহাড়ি ঢল থেকে নেমে আসা বিশুদ্ধ নদী হিসেবে পরিচিত গঙ্গার জলে অম্লীয় বৃষ্টিপাত, শিল্পকালো ধোঁয়া আর তীব্র কৃষি রাসায়নিকের দাগ ধরেছে বহুদিন। সম্প্রতি কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে মণিবন্টন করেছেন অধ্যাপক বর্ষা গুপ্ত ও তাঁর দল—গঙ্গার রুই মাছের শরীরে বিষাক্ত ধাতুর বিপর্যয়কর মাত্রা শনাক্ত হয়েছে। যাঁরা প্রতিদিন মাছ ভোজ করেন, তাঁরা যেন জানেন না বিপদের কথা, তা কী করে সম্ভব?

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

গবেষণার পদ্ধতি ও ফলাফল

কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গঙ্গার বিভিন্ন থার্কিং পয়েন্ট থেকে রুই মাছ সংগ্রহ করে তাদের কিডনি, অন্ত্র এবং পেশী অংশের নমুনা বিশ্লেষণ করেন। ল্যাব টেস্টে মিলেছে:

  • আর্সেনিক: স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দেয় কিডনি ও লিভার

  • ক্যাডমিয়াম: অস্থি ও কিডনির রোগের কারিগর

  • সীসা: মস্তিষ্ক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে, শিশুদের জন্য মারাত্মক

  • ক্রোমিয়াম ও কোবাল্ট: দীর্ঘমেয়াদে স্নায়বিক ক্ষতিসাধন করতে পারে

  • থ্যালিয়াম: হৃদযন্ত্রের ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলে

এই বিষাক্ত ধাতুর মাত্রা নিরাপদ সীমার অনেক গুণ উপরে পাওয়া গেছে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

কেন জরুরি সতর্কতা?

রুই মাছ শুধুমাত্র প্রিয় খাদ্য নয়, ঘনিষ্ঠ পুষ্টির উৎস—ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কম কোলেস্টেরল, প্রোটিনের ভাণ্ডার। কিন্তু আজ যখন মাছের মাংস ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গশোষণে বিষক্রিয়া যুক্ত, তখন স্বাস্থ্য ঝুঁকি অর্জনের পথে এককথায় ফাঁদ পাতা রয়েছে:

  1. দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার: ধাতুর বর্জ্য জমে দীর্ঘ বছর পর্যবেক্ষণ ছাড়া মারাত্মক হতে পারে

  2. জ্বর, বমি, পেটব্যথা: তেজস্ক্রিয় বিষক্রিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ

  3. শিশুদের বিকাশজনিত সমস্যা: স্নায়ুবিক বাধা, শেখার শক্তি কমে যাওয়া

  4. বয়স্কদের কিডনি–লিভার সমস্যা: বিষাক্ত লোড সামলাতে অক্ষম

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের করণীয়

  • নিয়মিত জলপরীক্ষা: গঙ্গার বিভিন্ন স্থানে পানি ও মাছের ধাতু মাত্রা পর্যবেক্ষণ।

  • কারখানা নিষেধাজ্ঞা: দূষণ সৃষ্টিকারী শিল্পের নির্দিষ্ট সীমা ও জরিমানা বাড়ানো।

  • জলশোধন: পর্যটন এলাকায়, শহরপঞ্জায় ফিল্টার প্ল্যান্ট স্থাপন।

  • জরুরি স্বাস্থ্য সচেতনতা: স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ এবং ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত করা।

অভিভাবক ও ভোজনপ্রিয়দের পরামর্শ

  • বিকল্প মাছ নির্বাচন: রোগমুক্ত নদী-মাছ বা ল্যাব ফার্মের মাছ খাওয়া বেশি নিরাপদ।

  • রান্নার প্রক্রিয়া: চর্বি ও তেল ডিজেল ফিল্টারিং; ধীরে আঁচে ভালোমতো সিদ্ধ করুন।

  • সাপ্তাহিক মাত্রা: সপ্তাহে এক–দুইবারেই রুই মাছ গ্রহণ করুন, অতিরিক্ত নয়।

  • বয়স্ক–শিশুদের নজর: শিশু ও প্রবীণদের সুষম খাদ্য তালিকা পরিকল্পনা করুন—শাকসবজি, ডাল, ফল মিশিয়ে।

গঙ্গার জলবায়ু-বৈচিত্র্য রক্ষা যত জরুরি, আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাও তার চেয়েও কম নয়। রুই মাছের স্বাদ-সুখের পিছনে এত বিষাক্ত ধাতুর গল্প লুকিয়ে রয়েছে তা জেনে নিলে নিশ্চিন্তে ভোজন আর নির্ভরতা রাখা দুষ্কর। সতর্ক হোন, নিজে বুঝুন এবং আশপাশের মানুষদের জানান—আলাদা করে বলুন, রুই মাছ খেলেই নয়, নিরাপদ মাছ এবং রান্নার পদ্ধতির মিশেলে বেঁচে থাকুন সুস্থ হৃদয়ে!

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।