TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

বাম নেতার জামা ছিঁড়ে গায়ে কালি! খড়গপুরের রাস্তায় যা ঘটল তা অকল্পনীয়, কারা করলো জানুন…

খড়গপুরে প্রকাশ্যে প্রবীণ বাম নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে শর্মার বিরুদ্ধে। ভাইরাল ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য। পুলিশের কাছে অভিযোগ, তৃণমূলের শোকজ।

Debapriya Nandi Sarkar

খড়গপুর শহরের রেলপাড়ে দিনের আলোয় ঘটে গেল লজ্জার এক রাজনৈতিক কাণ্ড। প্রকাশ্যে রাস্তার উপর ফেলে এক প্রবীণ বামপন্থী নেতাকে মারধর, ছিঁড়ে দেওয়া হল তাঁর জামাকাপড়, গায়ে ঢেলে দেওয়া হল দোকান থেকে নিয়ে আসা কাপড় কাচার নীল রঙ এবং দেওয়াল রঙের সাদা রঙ। অভিযোগের তির সরাসরি তৃণমূল নেত্রী বেবি কোলে শর্মা এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

ঘটনার বিবরণ

সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে খড়গপুর পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফটকবাজার এলাকায়, একটি হনুমান মন্দিরের উল্টোদিকে মালঞ্চ রোডে। নির্যাতিত নেতা অনিল ওরফে ভীম দাস, যিনি বাম সংগঠন ‘আমরা বামপন্থী-খড়গপুরে’র সম্পাদক, জানান তিনি প্রতিদিনের মতো যাচ্ছিলেন খড়িদা রেলগেটের দিক থেকে। তখনই বেবি শর্মা ও তাঁর অনুগামীরা তাঁকে রাস্তার উপর থামিয়ে মারধর শুরু করেন।

“ভোজালি আনো!”— পরিকল্পিত খুনের চেষ্টা?

অনিল দাস অভিযোগ করেন, তাঁকে মারতে মারতে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার পর অভিযুক্ত বেবি এক অনুগামীকে বলেন, “ভোজালি আনো।” প্রাণভয়ে তিনি দৌড়ে পাশের একটি রংয়ের দোকানে আশ্রয় নেন। সেখানেই এক অনুগামী জোর করে দোকানের ভিতর থেকে সাদা রঙের টিন তুলে এনে তাঁর মাথায় মারেন। তাতে পুরো শরীরে রং মাখামাখি হয়ে যায়।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

থানায় লিখিত অভিযোগ, হাসপাতালের বিছানায় ভীম দাস

এই ঘটনার পরে খড়গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভীম দাস। একই সঙ্গে রংয়ের দোকানের মালিক কমল জৈনও পৃথক অভিযোগ করেছেন, তাঁর দোকান থেকে জোর করে রং ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে। বর্তমানে অনিল দাস খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দলীয় শোকজ, মুখর তৃণমূল নেতৃত্ব

ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা অভিযুক্ত নেত্রী বেবি কোলে শর্মাকে শোকজ করেছেন এবং তিন দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছেন। সুজয় বলেন, “৭০ বছরের একজন প্রবীণ নেতাকে প্রকাশ্যে যেভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে, তা কখনও বরদাস্ত করা যায় না। দল এই ঘটনার সঙ্গে নেই।” বেবি কোলে শর্মা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “অনিল দাস আমার তিনজন অনুগামীর কাছ থেকে কাজ করিয়ে দেওয়ার নাম করে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ করেননি, টাকাও ফেরত দেননি।” তবে তিনি কবে কোথায় এই ঘটনা ঘটেছে তার কোনও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। দলকেও কিছু জানাননি বলে স্বীকার করেন।

বিরোধী এবং দলের ভেতর থেকেই প্রতিবাদ

ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন সিপিএমের খড়গপুর শহর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক মধুসূদন রায়। তিনি বলেন, “শহরের এক প্রবীণ নেতাকে প্রকাশ্যে এইভাবে মারধর অভূতপূর্ব। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” তৃণমূলের বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু ভীমদা সমাজের জন্য কাজ করেন। তাঁকে এভাবে হেনস্থা করা কখনওই ঠিক নয়।”

অতীত ইতিহাস ও দলবদল

উল্লেখযোগ্যভাবে, বেবি কোলে শর্মা পূর্বে বিজেপির সদস্য ছিলেন। ২০২২ সালের পুরভোটে টিকিট না পেয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর থেকেই তিনি বেপরোয়া আচরণ করছেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে সমাজমাধ্যমে তাঁকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। বেবি কোলে শর্মার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারির দাবিতে জোরালো আওয়াজ উঠেছে শহরের নানা প্রান্তে।