TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

বাঁধে জল নেই, চোখে জল পাকিস্তানের—ভারতের কড়া কূটনীতির ধাক্কার মজা টের পাচ্ছে পাকিস্তান

ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার পর পাকিস্তানে চাষাবাদে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। দুই প্রধান বাঁধে জলসংকট এতটাই গভীর যে কৃষকরা বলছেন—এবার খরিফ মরশুম ভয়াবহ হবে। শুরু হয়েছে চরম উদ্বেগ ও হাহাকার।

Debapriya Nandi Sarkar

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে সিন্ধু জল চুক্তি সাময়িক স্থগিত করার ফল এখন ভালোভাবে বুঝতে পারছে পাকিস্তান। দেশটির দুই গুরুত্বপূর্ণ জলাধার—মঙ্গলা (ঝিলাম নদী) এবং তারবেলা (সিন্ধু নদী)—তে জলস্তর ভয়ানকভাবে নেমে গিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে সেচব্যবস্থা ও কৃষিতে। পাকিস্তানের সিন্ধু নদী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (IRSA) জানিয়েছে, দেশটি বর্তমানে ২১% জলপ্রবাহে ঘাটতি এবং জীবন্ত জলাধারে প্রায় ৫০% জলসংকটে পড়েছে। কৃষকদের দাবি, খরিফ মরশুমের শুরুতেই ফসল বপনে বাধা দেখা দিচ্ছে।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

চরম সংকটে পাঞ্জাব ও সিন্ধ প্রদেশ

পাকিস্তানের দুই প্রধান চাষবাস কেন্দ্র পাঞ্জাব ও সিন্ধ প্রদেশ মূলত এই জলাধারগুলির উপর নির্ভরশীল। জল না থাকলে যেমন সেচব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে, তেমনই বিদ্যুৎ উৎপাদনেও বিশাল ঘাটতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে।

বিশ্বমঞ্চে ভারতকে কাঠগড়ায় তুলতে মরিয়া শেহবাজ

জলসংকটে উদ্বিগ্ন হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। সম্প্রতি এক হিমবাহ সংরক্ষণ বিষয়ক সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে জল সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের কৃষিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে।” তিনি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “এটা শুধু পাকিস্তানের সমস্যা নয়, এশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত সংকটের অঙ্গ। ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমগ্র অঞ্চলকে বিপদের মুখে ফেলছে।”

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

চেনাব নদীর জলপ্রবাহ হঠাৎ কমেছে

IRSA আরও জানিয়েছে, চেনাব নদীর মারালা সেকশনে ভারত হঠাৎ করে জলপ্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে খরিফ মরশুমের শুরুতেই জলনির্ভর বপন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, আগামী দিনগুলোতে এই ঘাটতি আরও তীব্র আকার নেবে।

চুক্তি স্থগিতের ছায়া কী দীর্ঘমেয়াদি?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ধু জল চুক্তি এক সময় ভারত-পাকিস্তানের কূটনৈতিক শান্তির প্রতীক ছিল। এখন সেটিই পরিণত হয়েছে দুই দেশের টানাপোড়েনের নতুন অস্ত্রে। ভারতের জল ছাড় কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাহলে পাকিস্তানে চাষাবাদ থেকে শুরু করে জলবিদ্যুৎ ও জনজীবন পর্যন্ত সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে।

সিন্ধু চুক্তি স্থগিত হওয়ার ফলে এখন পাকিস্তানের কৃষিতে মরু হাওয়া। চাষীরা অসহায়, সরকার চাপের মুখে, আর শেহবাজ সরকারের একটাই পথ—আন্তর্জাতিক সহানুভূতি কুড়ানো। কিন্তু ভারত তাদের কাছে কোনো ছাড় দেবে কি না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এটা পরিষ্কার—পানিই এখন দুই দেশের ‘নতুন অস্ত্র’ হয়ে উঠেছে।