TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

শুধু রেজিস্ট্রি করলেই মালিক নন! সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বদলে গেল জমি-বাড়ি কেনার নিয়ম

শুধু রেজিস্ট্রেশন করলেই আর প্রপার্টির মালিক বলে গণ্য হবেন না—সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে সম্পত্তি কেনার নিয়মে বড় বদল। কী কী নথি লাগবে মালিকানা প্রমাণে? বিস্তারিত জানুন।

Debapriya Nandi Sarkar

সারা জীবন পরিশ্রম করে একটি বাড়ি বা জমির মালিক হওয়া—এ যেন মধ্যবিত্তের চিরন্তন স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্নপূরণের পরও যদি আইনি জটিলতায় পড়তে হয়? হ্যাঁ, সম্প্রতি এমনই এক রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট, যা সম্পত্তি কেনাবেচার পুরনো ধ্যানধারণাকে পালটে দিয়েছে। এই রায়ের ফলে এখন থেকে শুধু রেজিস্ট্রি করালেই প্রপার্টির মালিক হিসেবে নিজেকে দাবি করা যাবে না। মালিকানা প্রমাণের জন্য আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকা আবশ্যক।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

কী বলেছে সুপ্রিম কোর্ট?

সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ে বলা হয়েছে—যদি কোনও সম্পত্তি প্রথমবার ‘আনরেজিস্টার্ড সেল এগ্রিমেন্ট’-এর ভিত্তিতে কেনা হয়ে থাকে, তাহলে দ্বিতীয়বার কেউ তা রেজিস্ট্রি করালেও মালিকানা আইনত স্বীকৃত হবে না। অর্থাৎ, শুধুমাত্র রেজিস্ট্রি সার্টিফিকেট দিয়ে এখন আর সম্পত্তির মালিকানা প্রমাণ করা যাবে না।

কোন কোন নথি থাকা বাধ্যতামূলক?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ভবিষ্যতে সম্পত্তির ওপর দাবি করতে চাইলে যে নথিগুলো থাকা জরুরি:

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now
  • সেল ডিড (Sale Deed)

  • টাইটেল ডিড (Title Deed)

  • মিউটেশন সার্টিফিকেট (Mutation Certificate)

  • প্রপার্টি ট্যাক্স রিসিট (Property Tax Receipt)

  • পজিশন লেটার (Possession Letter)

  • রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (Registry Certificate)

এই সমস্ত নথি না থাকলে, ভবিষ্যতে কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে সেই জমি বা ফ্ল্যাট নিয়ে কোনও মিথ্যে দাবি করে, তাহলে আপনি আইনি ভাবে দুর্বল হয়ে পড়বেন।

রেজিস্ট্রি করলেই মালিক—এই ধারণা ভুল

এতদিন পর্যন্ত বহু মানুষই ভাবতেন, বাড়ি বা জমি কিনে রেজিস্ট্রি করালেই কাজ শেষ। কিন্তু এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন করলেই আপনি সম্পত্তির অধিকারী হন না। মালিকানা নিশ্চিত করতে হলে প্রয়োজন উপরে উল্লেখিত যাবতীয় নথির। বিশেষজ্ঞদের মতে, “রেজিস্ট্রি হল প্রাথমিক ধাপ মাত্র। সম্পূর্ণ মালিকানা পেতে হলে জমির সমস্ত কাগজপত্র হালনাগাদ ও বৈধ হতে হবে।”

কেন এই রায় গুরুত্বপূর্ণ?

ভারতে বহু মামলাতেই দেখা গেছে, একাধিক পক্ষ একটিমাত্র সম্পত্তির ওপর মালিকানা দাবি করছেন। অনেক সময় দেখা যায়, এক পক্ষের কাছে রেজিস্ট্রি থাকলেও অন্য পক্ষের কাছে টাইটেল ডিড বা মিউটেশন সার্টিফিকেট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কে প্রকৃত মালিক—তা নির্ধারণ করতে হিমশিম খেতে হয় আদালতকে। এই প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশিকা বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

আপনার কী করণীয়?

যদি আপনি সদ্য কোনও সম্পত্তি কিনে থাকেন, তা হলে শুধু রেজিস্ট্রি করেই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকবেন না। নিশ্চিত করুন:

  • মিউটেশন আপনার নামে হয়েছে

  • সমস্ত ট্যাক্স সময়মতো পরিশোধ হয়েছে

  • সেল ডিড ও টাইটেল ডিড আপনার দখলে আছে

  • স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতে আপনার নাম নথিভুক্ত আছে

এই সমস্ত কাগজপত্র আপনার কাছে থাকলে, ভবিষ্যতে কোনও আইনি সমস্যায় পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা শুধু আবেগ নয়, অনেকের জীবনসঞ্চয়ের ফল। তাই সম্পত্তি কেনার সময় শুধু রেজিস্ট্রি নয়, অন্যান্য কাগজপত্র নিয়েও সচেতন হওয়া এখন সময়ের দাবি। অন্যথায়, একটি আইনি ফাঁস আপনার স্বপ্নকে পরিণত করতে পারে দীর্ঘমেয়াদী দুঃস্বপ্নে।